কামারুজ্জামানের কবরের পাশে গ্রামবাসীদের ভিড়
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪৮:৩৭,অপরাহ্ন ১২ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে যেখানে কবর দেয়া হয়েছে সেই শেরপুরের কুমরি বাজিতখিলা গ্রাম থেকে অতিরিক্ত পুলিশ প্রহরা তুলে নেয়ার পর আশপাশের গ্রামগুলো থেকে বহু মানুষকে সেখানে ভিড় করতে দেখা গেছে।
সংবাদদাতারা বলছেন এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন আবেগতাড়িত। তবে স্থানীয় জামায়াত বা শিবিরের কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি, তাদের কোনও প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি। শনিবার রাতে ফাঁসি কার্যকরের পর কামারুজ্জামানের মৃতদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কড়া পুলিশ প্রহরার মধ্যে আত্মীয়-স্বজন ও কিছু প্রতিবেশীর উপস্থিতিতে আজ রবিবার ভোরবেলা তার দাফন অনুষ্ঠিত হয়।
ভোররাতে মুহাম্মদ কামারাজ্জামানকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স যখন শেরপুর সদর উপজেলার কুমরি বাজিতখিলা গ্রামে পৌঁছায় তখন তার বাড়িকে ঘিরে রেখেছিল কয়েকশো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আর্মড পুলিশের সদস্য। কাউকেই আশেপাশে ভিড়তে দেয়া হচ্ছিল না।
নামাজে জানাজায় অংশ নিতে পারে জনা পঞ্চাশেক মানুষ, যাদের অধিকাংশই ছিলেন কামারুজ্জামানের স্বজন, বাকিরা প্রতিবেশী। এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই ভোর সোয়া পাঁচটা নাগাদ তাকে কবর দেয়া হয়।
সকাল সাতটার পর পুলিশ বিধি নিষেধ কিছুটা শিথিল করলে সেখানে সাংবাদিকেরা এবং স্থানীয় মানুষজন প্রবেশাধিকার পায়। সেখানে অনেককেই বিলাপ করতে দেখা যায়। এরা ছিলেন মূলত মি কামারুজ্জামানের আত্মীয়, প্রতিবেশী এবং কিছু উৎসুক জনতা।
ওই গ্রামে টোখে পড়েনি জামায়াত বা শিবিরের দলীয় কোনও কর্মসূচী। স্থানীয়ভাবে তাদের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়াও আসেনি বলে জানা যায়।
তবে জামায়াতে ইসলামির ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, আজকের (রোববার) দিনটিতে তারা দেশ জুড়ে দোয়া অনুষ্ঠানের কর্মসূচী পালন করছে এবং আগামীকাল সোমবার হরতাল পালন করবে। মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুতে দেশে এবং বিদেশের বিভিন্নস্থানে আজ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জামায়াত ও শিবিরপন্থী বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে
তবে এর আগে ২০১৩ সালের শেষভাগে আরেক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবার পর পর যেভাবে বাংলাদেশে সহিংস প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের পরদিন আজ রোববার পর্যন্ত দেশের কোনও জায়গা থেকেই তেমন কোনও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
গণমাধ্যমে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তাদের কাছে যে গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছিল, তাতে সহিংসতা হবে বলে কোনও পূর্বাভাসও ছিল না।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে দশটায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এর ঘন্টাখানেক পরেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তার মৃতদেহ শেরপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়ে দেয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করবার জন্য।
সূত্র :-বিবিসি বাংলা।