কর্ণফুলীতে যুবলীগ নেতার অবৈধ ঘাট
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৯:৩৭,অপরাহ্ন ২৩ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
কর্ণফুলী নদীর চাক্তাই খালের মোহনায় অবৈধভাবে একটি ঘাট তৈরি করেছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা। আদায় করছে টোলও। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বৈধ ইজারাদার। সিটি করপোরেশন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা মিলছে না।
করপোরেশন সূত্র জানায়, কর্ণফুলী নদীর নতুন ঘাট ও ফিশারী ঘাট ইজারা দিতে গত ১৩ অক্টোবর দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিটি করপোরেশন। ২০ অক্টোবর দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৪৫ লাখ টাকায় ছয় মাসের জন্য ঘাট দুটি ইজারা পান সাগর বণিক নামের এক ইজারাদার। ইজারার টাকা পরিশোধের পর ঘাট দুইটি বুঝিয়ে দেয় সিটি করপোরেশন। ফিসারী ঘাটের ইজারা সাগর বণিক তুলতে পারলেও নতুন ঘাটে অবৈধভাবে ভাগ বসিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতা। টোল আদায় করছেন তার অনুসারীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চাক্তাই খালের শাখা খালের মোহনায় ফিশারী ঘাট। চাক্তাই খালের মোহনায় নতুন ঘাট। চাক্তাই খালের এক পাড়ে টোল আদায় করছে বৈধ ইজারাদার সাগর বণিক। অপর পাড়ে অবৈধভাবে টোল আদায় করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। চাক্তাই খালের নির্মিত নতুন ব্রিজের নিচে বানানো হয়েছে টোল ঘর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, অবৈধ টোল ঘরে ঝুলছে সিটি করপোরেশনের একটি সাইনবোর্ড। টোল ঘরটি বন্ধ। ভেতরে শুয়ে আছেন এক ব্যক্তি। টোল ঘরটি কার ওই ব্যক্তির জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এটি মামুনের। তিনি সিটি করপোরেশন থেকে ঘাটটি ইজারা নিয়েছেন। ’ কিন্তু তার নাম কিংবা টোল আদায়কারী কারও পরিচয় দিতে রাজি হননি টোল ঘরে শুয়ে থাকা লোকটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক উপ সম্পাদক। ঘাটটি মামুন তৈরি করলেও টোল আদায় করেন তার অনুসারী মঈন উদ্দিন, বাদশা গাজী, মো. আতিক, মো. আজিজ, মো. সেলিম ও মো. বাবুল। তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানা ও সিটি করপোরেশনে লিখিত অভিযোগও রয়েছে।
নতুন ঘাটের ইজারাদার সাগর বণিক বলেন,‘দুইটি ঘাট ভ্যাটসহ ৫৪ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি। দুইটি ঘাটের মধ্যে ফিসারী ঘাটের প্রবেশ পথ সেতু তৈরি করে বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নতুন ঘাটের একাংশ টোল আদায় করতে পারলেও অন্য অংশ দখল করে রেখেছে অবৈধ দখলদাররা। তাদের উচ্ছেদ করতে সিটি করপোরেশনের কাছে বারবার অভিযোগ করলেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কোতোয়ালী থানায়ও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইজারার মেয়াদ প্রায় তিন মাস শেষ হয়েছে। অবৈধ ঘাটটি উচ্ছেদ করা না হলে পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যুবলীগের একটি সূত্র দাবি করেছে, আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর মেয়ে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে তাকে প্রায় বিদেশে থাকতে হয়। এর ফাঁকে কেউ তার নাম ভাঙ্গিয়ে এ অপকর্ম করছে।
সিটি করপোরেশনের সহকারি ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা এখলাছ উদ্দিন আহমদ বলেন,‘নতুন ঘাটে একটি অবৈধ ঘাট বসিয়েছে বলে শুনেছি। ইজারাদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ ঘাটটি উচ্ছেদ করতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফাইল পাঠানো হয়েছে।’