কমলগঞ্জে শেষ শ্রদ্ধায় সমাহিত জুম্মন লুসাই
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫৭:৩৯,অপরাহ্ন ২২ জানুয়ারি ২০১৫
স্পোর্টস ডেস্ক::
শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে জীবনের সবচেয়ে প্রিয় স্থান মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে গতকাল ২২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাধিস্থ হলেন হকি তারকা জুম্মন লুসাই। মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান (খাসিয়া মন্ত্রী) জিডিশন প্রধান সুচিয়াং জুম্মনের বাল্যবন্ধু আত্মীয়। ফলে প্রিয় স্থানেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় জুম্মনকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে গিয়ে তার বিদায় অনুষ্টানে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্যা, আবাহনী ক্রীড়া সংস্থার কোচ মাহবুব হারুন সহ বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ ইউএনও মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ হেলাল উদ্দিন, শ্রীমঙ্গল ইউএনও, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব জুম্মন লুসাইর বন্ধু মিলন দাশ গুপ্ত, বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে জুম্মন লুসাই’র প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি’র পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হিমাগার থেকে তার লাশ নিয়ে আসা হয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়ের সামনে। এখানে ক্রীড়া সংস্থার নেতা ও ক্রীড়ামোদীদের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায়। এ সময় জুম্মন লুসাইয়ের স্ত্রী থানপুই লুসাই ও তিন সন্তান রিচার্ড, কেলভিন ও ডেভিড উপস্থিত ছিলেন। স্ত্রী-সন্তানরা দেশের বাইরে থাকায় রোববার পরপারে চলে যাওয়া হকি তারকা জুম্মন লুসাইয়ের লাশ সিওমেক হিমাগারে রাখা হয়েছিল। মারা যাওয়ার পর প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় থাকা বাগানবাড়িতে জুম্মন লুসাইকে সমাধিস্থ করার। সিলেট নগরীতে সমাধিস্থ করারও প্রস্তাব আসে। পরে জুম্মনের প্রিয় স্থান হিসেবে মাগুরছড়ায় সমাধিস্থ করা হয়। গত ১৬ জানুয়ারি হঠাৎ বমি করার পর অজ্ঞান হয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় হকি তারকা জুম্মনকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ জানুয়ারী রোববার তিনি না-ফেরার দেশে চলে যান। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে লাশ সিলেটে নিয়ে আসা হয়। সিলেটে লাশ গ্রহণ করেন জুম্মন লুসাইয়ের বোন মাম্মি লুসাই, ছোট ভাই জুবেল লুসাইসহ সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতারা। প্রয়াত জুম্মন লুসাইয়ের সঙ্গে ঢাকা আবাহনী ক্লাবের ছিল নাড়ির বন্ধন। ভাই রামা লুসাই তাকে একবার মোহামেডানেও নিতে চেয়েছেন, কিন্তু রাজি হননি জুম্মন। আবাহনী ক্লাবে ১৯৮২-তে ক্যারিয়ার শুরু, শেষও একই ক্লাবে। তাও সেই ১৯৯৯ সালে খেলা ছেড়েছেন কিন্তু ক্লাব ছাড়েননি। থাকতেন ওখানেই। ১৬ জানুয়ারি বিকেলে ক্লাবের মাঠেই ছোট ছেলেদের সঙ্গে খেলছিলেন জুম্মন লুসাই। এরই মধ্যে হঠাৎ করে বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর তিনি আর সুস্থ হয়ে উঠেননি। জুম্মনের পূর্বপরুরা মিজোরাম থেকে এসেছিলেন। জুম্মনের বাবা চাকরি করতেন পুলিশে।