কমলগঞ্জে মণিপুরী থিয়েটারের নতুন প্রযোজনা ‘লেইমা’ শুক্রবার মঞ্চস্থ হবে
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৪৮:১৫,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০১৫
কমলগঞ্জ সংবাদদাতা::
বাংলাদেশের একমাত্র গ্রামীণ থিয়েটার স্টুডিও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা নটমন্ডপে মণিপুরী থিয়েটারের নতুন প্রযোজনা কবি ও নাট্যকার শুভাশিস সিনহা সমীরের নির্দেশিত ‘লেইমা’ ১০ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় মঞ্চস্থ হবে। দীর্ঘ তিন বছর পর মণিপুরি থিয়েটারের নতুন প্রযোজনা ‘লেইমা’ মঞ্চে আসছে। ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকার ইয়ের্মা অবলম্বনে নতুন নাটক লেইমার বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষান্তর ও নির্দেশনা দিয়েছেন শুভাশিস সিনহা সমীর। মণিপুরি নানান আঙ্গিক ও পাশ্চাত্য অভিনয়রীতির রসায়নে দেড় ঘণ্টার ‘লেইমা’ নাটকটিতে লেইমার ভূমিকায় অভিনয় করছেন জ্যোতি সিনহা।
এছাড়াও নাটকটিতে অভিনয় করছেন বিধান সিংহ, সুরজিৎ সিংহ, শুক্লা সিনহা, সঞ্জিত সিংহ, উজ্জ্বল সিংহ, সমরজিৎ, দীপু, শুক্লা জুনিয়র, সুস্মিতা, অনামিকা, সমরজিত ও সুকান্ত। সঙ্গীতে আছেন শর্মিলা সিনহা ও কৃষ্ণকুমারী সিনহা। বাদ্যে বাবুচান সিংহ, বিধান চন্দ্র সিংহ, অঞ্জনা, শুক্লা, সুশান্ত ও শোভন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় কমলগঞ্জের ঘোড়ামারায় বাংলাদেশের একমাত্র গ্রামীণ থিয়েটার স্টুডিও মণিপুরি থিয়েটারের নটমণ্ডপে দর্শনীর বিনিময়ে লেইমার উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। একই দিন রাত আটটায় দ্বিতীয় এবং পরদিন শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় তৃতীয় ও রাত আটটায় চতুর্থ প্রদর্শনী হবে। ইতিমধ্যে কমলগঞ্জে মণিপুরী থিয়েটারের পক্ষ থেকে প্রচারনা শুরু হয়েছে।
আলাপকালে মণিপুরী থিয়েটারের সভাপতি কবি ও নাট্যকার শুভাশিস সিনহা সমীর জানান, দীর্ঘ তিন বছর পর দলের নতুন নাটক মঞ্চে আসছে আজ। গত একটি বছর লোরকার ‘ইয়ের্মা’কে ‘লেইমা’ন্তরিত করার জন্য আপ্রাণ প্রয়াস নিয়েছিলাম। কয়েক দফা পাঠ, চর্চার পরে প্রায় দেড় মাস টানা মহড়ার পর চুড়ান্ত প্রস্তুতি শেষে ১০ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কমলগঞ্জের ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরি থিয়েটারের নিজস্ব স্টুডিও নটমণ্ডপে মেইখুম্বি (ঘোমটা) সরাবে ‘লেইমা’। পুরনোদের সঙ্গে নতুন এক ঝাঁক ছেলেমেয়ের অভিনয়ে দেড় ঘন্টার এই নাটক সবাই উপভোগ করবেন আশা করি। গ্রামের নিবিড় প্রকৃতির মায়ায় এক স্প্যানিশ ইয়ের্মা কীভাবে মণিপুরি লেইমা হয়ে উঠেছে, তা দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শুভাশিস সিনহা সমীর।
এক বন্ধ্যা নারীর মনস্তাত্ত্বিক সংকটকে কেন্দ্র করে ‘লেইমা’র কাহিনী গড়ে উঠেছে। নাটকে দেখা যাবে, একটি সন্তানের জন্য লেইমা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু স্বামী জয় এ বিষয়ে একেবারে উদাসীন। সে নিজের আর্থিক অবস্থার উত্তরণের মানবিক আকাঙ্ক্ষাগুলো পর্যন্ত হারিয়ে বসে। দিন-রাত বাইরে বাইরে খাটে। এদিকে লেইমার পুরনো প্রেমিক ব্রজ প্রেরণা দেয় জীবনের। এক দিন ত্রিমুখী সংকট দেখা দিলে ব্রজ বিদায় নিয়ে যায় অন্য এলাকায়। দিন দিন বন্ধ্যাত্বের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া লেইমা এক দিন নিজেকে মাতৃত্বের দায় থেকে মুক্তি দিতে জয়কে হত্যা করে। আর্তনাদে ভেঙে পড়ে বলে, ‘আমি আমার সন্তানকে হত্যা করে ফেলেছি!’