এখনো শক্ত অবস্থানে খালেদা জিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৪১:২৪,অপরাহ্ন ৩১ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখনো শক্ত অবস্থানে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী নতুন নির্বাচনের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না বলেও ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন। এরই মধ্যে অবরোধের সঙ্গে রবিবার ভোর ৬টা থেকে টানা ৭২ ঘণ্টা দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। যথাশীঘ্র নতুন নির্বাচন নিয়ে ‘সুনির্দিষ্ট’ আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ডাকা ‘অবরোধ’ কর্মসূচিও অব্যাহত রাখতে চান বেগম জিয়া। যে কোনো দিন নিজের ওপর গ্রেফতারের খড়গ নেমে এলেও চিন্তিত নন ২০ দলীয় জোটপ্রধান। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সান্ত্বনা দিতে গুলশান কার্যালয়ে গেলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন বেগম জিয়া। নতুন নির্বাচনের দাবি আদায়ে প্রয়োজনে ফেব্রুয়ারিতে অসহযোগ আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিতও দেন তিনি। আন্দোলন কর্মসূচি ছাড়া দাবি আদায়ের কোনো পথ খোলা নেই বলেও নেতাদের সাফ জানিয়ে দেন বেগম জিয়া। হরতাল-অবরোধ শিথিলে যেসব নেতা এর আগে মতামত দিয়েছিলেন, তারা গতকাল বিএনপিপ্রধানের মনোভাব দেখে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেন। অবরোধের পাশাপাশি হরতাল চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে তারাও মত দেন। ৭২ ঘণ্টার হরতালের বিষয়টি স্থায়ী কমিটির বৈঠকেই চূড়ান্ত হয় বলে সূত্র জানায়। অবশ্য এর আগে জোটের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা কথা বলেন। তবে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর গতকাল বিকালে ২০ দলীয় জোটের এক শীর্ষ নেতা জানান, অবরোধের সঙ্গে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। গণমাধ্যমের সুবাদেই তিনি কর্মসূচি জেনেছেন।
বিএনপি নেতারা জানান, সরকারকে চাপে রাখতেই এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে ২০ দল। জনগণ বিক্ষুব্ধ হলে এর একটি নেতিবাচক প্রভাব সরকারের ওপরও বর্তাবে বলে মনে করেন তারা। ২০ দলের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে মন্তব্য করে নেতারা বলেন, এখন আর পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পুত্রশোকের মধ্যেও অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন। আন্দোলনকে একটি ‘যৌক্তিক’ পর্যায়ে নিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অবরোধের পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচি চলবে। তাছাড়া কেন্দ্র না চাইলেও তৃণমূল কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে রয়েছে। জানা গেছে, আন্দোলন কর্মসূচি এখন আর সেই অর্থে কেন্দ্রের হাতে নেই। তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। এটা কোনোভাবেই এ মুহূর্তে বন্ধ করা ঠিক হবে না। এতে বিএনপিসহ ২০ দলের মাঠের নেতা-কর্মীরা নতুন করে হয়রানির শিকার হবে। হত্যা, গুম, অপহরণ কিংবা ক্রসফায়ারের শিকার হওয়ার আশঙ্কা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। তাই বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বও তৃণমূলের মনোভাবে অনড় অবস্থানে। সরকার নতিস্বীকার না করা পর্যন্ত আন্দোলন-কর্মসূচি চলতেই থাকবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকার হার্ডলাইনে। বিএনপিরও হার্ডলাইনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। আমি মনে করি, এখনো সরকারের সংলাপ-সমঝোতার পথে ফিরে আসা উচিত। কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার ভার নেওয়ায় এটা তাদেরই দায়িত্ব। বেগম জিয়া সব সময় সংলাপ-সমঝোতার দ্বার খুলে রেখেছেন। সরকারকেই এর উদ্যোগ নিতে হবে।-বিডি প্রতিদিন