উপজেলার উন্নয়নে যেভাবে ভূমিকা রেখে গেলেন বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৪:০৩,অপরাহ্ন ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
সফিকুল ইসলাম। তিনি মতলব দক্ষিণের উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছিলেন। এ উপজেলার একজন সরকারী কর্মকর্তাই বটে, সরকারি চাকুরি সূত্রেই মতলব এসেছেন আবার চলে যাবেন তবে তিনি গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে সৃষ্টিশীল কিছু করার চেষ্টা করেছেন। অনেক নির্বাহী অফিসারিই আসে আবার চলেও যায়। অনেককে মনে রাখি আবার কাউকে মনে রাখিনা তবে সৃজনশীল বা বাড়তি কাজ যারা করেন তাদেরকে মনের অজান্তেই মনে রাখতে হয়। জানিবুল হক, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস আর সফিকুল ইসলাম তেমনি ব্যাক্তিত্ব। মতলবের মানুষ তাকে আজীবন তাকে মনে রাখবে। মতলবের প্রতিটি গ্রামে ভিজিট করে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করে তথ্য সংগ্রহ করে ‘মতলবের ইতিবৃত্ত’ শিরোণামে মতলবের ইতিহাস ঐতিহ্য, সংস্কৃতিসহ প্রতিটি গ্রাম, ইউনিয়ন ও উপজেলার বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি বই প্রকাশ করেছেন। মতলবের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে এ বইটি মতলবের কৃষ্টি, কালচার, অর্থনীতি, প্রকৃতি, ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি তথা সকল বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে প্রকাশের অনবদ্য এক চেষ্টা। প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে গিয়ে স্থানীয় বয়স্ক, অভিজ্ঞ, শিক্ষিত, সচেতন, ও অনুসন্ধিৎসু লোকজনের সাথে মতবিনিময় সভা করে, কথা বলে, সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্য সংগ্রহের প্রাণান্ত চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া সাবেক ত্রিপুরা (কুমিল্লা) জেলা, চাঁদপুর জেলা সম্পর্কিত বিভিনড়ব জাতীয় ও স্থানীয় প্রকাশনা/সংবাদপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। স্থানীয় লেখকবৃন্দ, ইতিহাসপ্রেমিকগণ, কলেজ-স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মতলব উপজেলা প্রশাসন শিক্ষা ট্রাস্ট নামে একটা শিক্ষা ট্রাস্ট গঠন করেছেন তিনি। এ নামে একাউন্ট করে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করে ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন।যার লভ্যাংশ দিয়ে প্রতিবছর শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষা খাতে কাজ করা যাবে।মূল টাকা আমানত হিসেবে আজীবন থাকবে। উপাদী উত্তর ইউনিযনের চেয়ারম্যান নির্বাচনে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে তিনি নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা উপহার দিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদেরকে স্বপ্ন দেখার জন্য এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন এবং ডিজিটাল ক্লাশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলার মধ্যে মতলব দক্ষিণ উপজেলায় সর্বসপ্রথম মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪০টি বিষয়ের ডিজিটাল কনন্টেন্ট তৈরী করে তা সব স্কুল সরবরাহ করেছেন। টিআরকাবিখা/৪০দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য তিনি প্রতিটি প্রকল্প ভিজিট করেছেন এবং দক্ষতার সংগে কাজ আদায় করেছেন। বসে থেকে নয়, পুরো উপজেলার প্রতিটি গ্রাম ঘুরে ঘুরে মানুষের সংগে মিশে মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের দুতলার কাজ তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। নিয়মিত মোবাইলকোর্ট ও উদ্ধুদ্ধকরণ প্রোগ্রাম ফলপ্রসূভাবে করে মাদক ও ইভটিজিং এর মাত্রা পূর্বের তুলনায় অনেক কমিয়ে এনেছেন যা প্রথম আলোতে ছাপানো হয়েছে এবং টিভি চ্যানেলে প্রদর্শিত হয়েছে। আমেনা ফার্মেসীর মোড়ের দুপাশের দোকান সরিয়ে রাস্তা প্রসারিত করে তিনি মতলববাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব করেছেন। উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার একটি বড় কক্ষে শিল্পকলার কার্যক্রম দক্ষতার সংগে জাকজমকপূর্ণভাবে শুরু হয়েছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীবৃন্দ সকলের সংগে সমন্বয় করে সুসম্পর্ক রেখে সফলভাবে উপজেলা চালিয়েছেন। সরকারি সম্পদ রক্ষায় শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।