ইডব্লিউজি’র মতে ৯৯% ভোট কেন্দ্রেই অনিয়ম
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৬:৩১,অপরাহ্ন ২৯ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ-এর (ইডব্লিউজির) পর্যবেক্ষণকৃত ৬১৯ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯৯% কেন্দ্রেই অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে থাকা এই সংগঠনটি।
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ আয়োজিত ‘ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্রাথমিক বিবৃতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যটি জানান সংগঠনটির পরিচালক ড. মহাম্মদ আব্দুল আলিম।
লিখিত বক্তব্যে ইডব্রিউজির পরিচালক ড. মহাম্মদ আব্দুল আলিম বলেন, এই নির্বাচন উল্লেখ যোগ্য মাত্রায় অনিয়ম এবং সহিংসতায় ভরপুর ছিল। বিপুল সংখ্যক ব্যালট ছিনতাই করে সিল মারা ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোট বাক্স দখল এবং নির্বাচনি সহিংসতার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং নির্বাচনের দিনে অনিয়মের কারনে ইডব্লিউজির এই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেনা। পরিকল্পিতভাবে ৩ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম অ সহিংসতার ঘটানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে যেসব জালিয়াতি হয়েছে তা নির্বাচনী ফলাফলকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এসব অনিয়মের প্রতিটি ঘটনাই ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা, স্বীকৃত পর্যবেক্ষক, প্রার্থীর এজেন্ট এবং নিরাপত্তা বাহিনির সামনেই ঘটেছে।
নির্বাচনী প্রকিয়ায় স্বচ্ছতা এবং সততা ক্ষুন্নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষকদের গতি-বিধি নির্দিষ্ট করতে কয়েকটি ওয়ার্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে কিছু বিধি নিষেদ আরোপ করে। কোন নোটিশ না দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষক কার্ড প্রদানে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।
এসময় পর্যবেক্ষণকালে তাদের সংগঠনের পর্যবেক্ষকরা বেশ কিছু অনিয়ম দেখেছেন বলে জানান তিনি। এসব অনিয়মের মধ্যে চট্টগ্রামে সকাল ১১ টা ৩৫ মিনিটে ২৫ থেকে ৩০ জন লোক জোরপূর্বক নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভয়-ভীতির সৃষ্টি করেন। এসময় অধিকাংশ ভোটাররা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায় এবং যারা যেতে পারেনি তাদেরকে মারধর করে। জোরপূর্বক ব্যালটবাক্স ছিনতাই করে নেয় ও বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ডুকিয়ে দেয়।
ঢাকা দক্ষিনে ওয়ার্ড নং ২ এ সকাল সাড়ে এগারোটায় ১০ ১২ জনের একটি দল চট্টগ্রামের মত একই ধরনের ঘটনা ঘটায়। সেসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনি তাদেরকে সহযোগিতা করে এবং কোন ভোটারদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
এসময় ৬১৯ টি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে ইডব্লিউজির অনেকগুলো অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেন। নিচে তা দেয়া হলঃ
ঢাকা দক্ষিন ৩৯ টি উত্তরে ৩৩ টি এবং চট্টগ্রামে ৩০ টি কেন্দ্রে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, ঢাকা দক্ষিনে ৪৬ টি উত্তরে ৫৫ টি এবং চট্টগ্রামে ৩৭ টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারা, ঢাকা দক্ষিনে ২৬ টি উত্তরে ৬৬ টি এবং চট্টগ্রামে ৭২ টি কেন্দ্রে সহিংসতা, ঢাকা দক্ষিনে ৬ টি উত্তরে ২১ টি এবং চট্টগ্রামে ৩২ টি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা, ঢাকা দক্ষিনে ১৯ টি উত্তরে ২৮ টি এবং চট্টগ্রামে ৩১ টি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ঢাকা দক্ষিনে ২ টি উত্তরে ২ টি এবং চট্টগ্রামে ২ টি কেন্দ্রে ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইডব্লিউজির কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, তালেয়া রহমান, কামরুল হাসান মঞ্জু প্রমুখ।