আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের ‘লাঠিয়াল’ বাহিনী : ২০দল
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪২:০৪,অপরাহ্ন ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খুনি, নির্যাতনকারী ও গণবিরোধী ভুমিকা পালনকারী উল্লেখ করে তাদেরকে ‘অবৈধ’
সরকারের ক্ষমতা রক্ষাকারী লাঠিয়াল বাহিনী বলে মন্তব্য করেছে চলমান আন্দোলনরত ২০ দল। গণবিরোধী ভূমিকা পালনকারী
এসব আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ও পরিচয় লিখে রাখতে বিরোধী নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান
জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পক্ষপাতদুষ্ট কতিপয় অতি উৎসাহী কর্মকর্তা এখন আইন, নিরপেক্ষতা ও মানবাধিকার ভঙ্গ করে আমাদের
আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুনাম, ঐতিহ্য ও নিরপেক্ষতা নষ্ট করছে এবং দেশে-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এতে জাতিসংঘ
শান্তিরক্ষা মিশনে এই বাহিনীগুলোর সদস্যদের গৌরবময় অংশগ্রহণের ধারাবাহিতকতাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে।
বিবৃতিতে সেলিমা রহমান বলেন, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এক নির্বাচনী প্রহসনে ক্ষমতাসীন বর্তমান
অবৈধ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তারা এখন মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে দমন-পীড়ন ও হত্যা-রক্তপাতের মাধ্যমে
ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। গণবিচ্ছিন্ন শাসকগোষ্ঠী এ ব্যাপারে আইন-শৃংখলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয়
বাহিনীসমূহের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
বিবৃতিতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা ২০ দলের নেতা-কর্মী ও জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছি, কেন্দ্র থেকে শুরু করে প্রতিটি
এলাকা পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যকলাপ সতর্ক পর্যবেক্ষণে রাখুন। খুনী, নির্যাতনকারী ও
গণবিরোধী ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপকর্ম ও নাম-পরিচয় আপনারা তালিকাভূক্ত করে রাখবেন। প্রয়োজনীয় তথ্য
প্রমান সংগ্রহ করে রাখবেন। আগামীতে এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০ দলের পক্ষে তিনি বলেন, আমাদের এ আহ্বানের পরেও আর যদি একটি বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটে, অন্যায়ভাবে
জুলুম-নির্যাতন, গুম-অপহরণ বন্ধ না হয়, তাহলে এর সঙ্গে জড়িতদের আমরা আগামীতে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হবার জন্য প্রস্তুত
থাকতে বলবো।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের চলমান আন্দোলন সম্পর্কে সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট দেশে
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটের অধিকারসহ জনগণের সমস্ত অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং আইনের শাসন ও মানবাধিকার পুন:প্রতিষ্ঠার
জন্য আন্দোলন করছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এটি। এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন।
এই আন্দোলন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি বলেন, পুলিশ-বিজিবি-আনসার-র্যাব হচ্ছে রাষ্ট্রের তথা জনগণের বাহিনী।
কোনো দলকে রক্ষা করা নয়, দলমত নির্বিশেষে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আজকের
সমস্যা শুধুমাত্র আইন-শৃংখলার সমস্যা নয়। এটি রাজনৈতিক সংকট, কাজেই রাজনৈতিক পন্থায় এর নিরসন করতে হবে। তা না
করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ক্ষমতাসীনেরা কূটকৌশলে ঠেলে দিচ্ছে জনগণের আন্দোলনের বিরুদ্ধে। এটা সকলকে
অনুধাবন করতে হবে।