অভিযানের ভয়ে দিনে যানবাহন কম, রাতে যানজট
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৮:৫১,অপরাহ্ন ১৬ নভেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: দেশজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চালকেরা অবৈধ ও ফিটনেস বিহীন যানবাহন আটকের ভয়ে দিনের বেলায় চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু রাতের বেলায় সকল অবৈধ ও ফিটনেস বিহীন যানবাহন একই সাথে চলার কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত দেশজুড়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসাবে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের সময় বাদ দিয়ে বাকী সময় কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব ফিটনেস বিহীন ও অবৈধ যান চলাচলের কারণে দিনের বেলায় রাস্তা ফাঁকা থাকলেও সন্ধ্যা থেকে যান চলাচল বেড়ে যাচ্ছে। অভিযানের ভয়ে এসব যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছে যাত্রীরা। তবে স্থায়ীভাবে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে না পারলে কিছু দিনের মধ্যে আবারো রাস্তায় নেমে পড়বে এসব ফিটনেসবিহীন যানবাহন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার চান্দিনা ও বুড়িচং এ সড়ক-মহাসড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মোটরযান অভিযান এড়িয়ে মহাসড়কে চালাচ্ছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। এর ফলে সড়ক-মহাসড়কে দিনের বেলায় যানবাহনের চাপ কম থাকলেও সন্ধ্যা থেকে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ থাকলেও কুমিল্লা মহানগরী ও মহাসড়কে তা হচ্ছে নামে মাত্র।
অভিযানের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন মহাসড়কের দাউদকান্দী টোল প্লাজা থেকে শুরু করে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চললেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঐ অভিযান অনেকটাই কমে গেছে। যে অংশের কারণে মহাসড়কে অবৈধ যান বেশি চলাচল করছে সেখানে নেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা। আবার অফিস সময় মোতাবেক সকাল ১০টার পর কিছু কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অবস্থান নিলেও বিকাল ৩টার আগেই শেষ হচ্ছে। বিকাল থেকেই বৈধ-অবৈধ, ফিটনেস যুক্ত-বিহীন সকল যানবাহন একযোগে চলাচল শুরু হলে যানজটের সৃষ্টি হয় মহাসড়কে।
চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে জানা য়ায়, দেশজুড়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযানের অংশ হিসাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জোরারগঞ্জ থেকে বার আউলিয়া পর্যন্ত চলছে অভিযান। যানজটের চিরচেনা মহাসড়কে পুলিশের অভিযানের কথা শুনে হঠাৎ ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে দূর-দূরান্তের যাত্রীরা।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ওসি মেহেদী হাছান ও মিরসরাই থানার ওসি (তদন্ত) আক্কাস আলী বলেন, শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশের জোরারগঞ্জ ও মিরসরাই থানা পুলিশ টিম ফিটনেসবিহীন ৩৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কোন কাগজপত্র না থাকায় শতাধিক গাড়ি আটক করেছে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ। এ অভিযান অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলবে।
কক্সবাজার উখিয়াতে দেখা যায়, গত সোমবার থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন যান চলাচল কমেছে। যানবাহন কমে যাওয়ায় যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।
অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ ও ফিটনেস বিহীন যানবাহন আটক করা হলেও ব্যাটারিচালিত গাড়ি অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অনেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, গাড়ির সংখ্যা কমে যাওয়ায় সাময়িক সমস্যা হলেও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হলে এটা মেনে নেয়া যায়। তবে তুলাবাগান হাইওয়ে পুলিশ, উখিয়া থানা পুলিশ ও থাইংখালী হাইওয়ে পুলিশ টোকেন নিয়ে সড়কে অবৈধ ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দেয়। এধরনের দুর্নীতি কমাতে না পারলে অভিযান শেষে একই চিত্র দেখা যাবে।