অবহেলিত শিশুদের জন্য আইসিটি সাপোর্ট দিচ্ছে বাংলালিংক: শিহাব আহমাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:২৪:০৪,অপরাহ্ন ১৬ নভেম্বর ২০১৪
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জেগে উঠছে গ্রামীণ অর্থনীতি। আর এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মোবাইল ফোন। দিন বদলের প্রত্যয় নিয়ে ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে নানা উদ্ভাবনী সেবা নিয়ে ব্যাপকভাবে গ্রামমুখী হয় বাংলালিংক। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে খুব কম সময়েই বাংলালিংক দেশের দ্বিতীয় শক্তিশালী মোবাইল অপারেটর হিসেবে অবস্থান করে নিয়েছে। বাংলালিংকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার (সিসিও) শিহাব আহমাদ বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করাই ছিল এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূল শক্তি।
‘দেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে একসময় গ্রামের মানুষ নানা প্রতিকূলতার মধ্যে থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাবে জেগে উঠেছে এখন দেশের গ্রামীণ জনপদ। প্রযুক্তির এই সুবিধার ফলে শহর আর গ্রামের মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমেছে। গ্রামের মানুষগুলো দিন দিন স্বনির্ভির হয়ে উঠেছে। আর এতে বিশেষ অবদান রাখছে মোবাইল প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার। এই প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে উঠেছে অনেক সহজ। ফলে শহর ও গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে।’
দেশের মোবাইল শিল্পে বাংলালিংকের বর্তমানকে ‘শক্তিশালী’ উল্লেখ করে শিহাব আহমাদ বলেন, ‘এই সাফল্যের পেছনে ছিল বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও বাজার। গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সময়োপযোগী ও উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবা চালু, নেটওয়ার্কের ব্যাপক উন্নয়ন, দেশজুড়ে শক্তিশালী ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক চালু, নিবেদিত গ্রাহকসেবার সমন্বয়ে দেশের টেলিকম শিল্পে বাংলালিংক একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলালিংকের সঙ্গে গ্রাহকের একটি আবেগপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা হয়েছে।’
দেশে মোবাইল ফোনের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী বাংলালিংকের সিসিও। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর মোবাইল ফোনের গ্রাহক প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি করে বাড়ছে। গত বছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৮ থেকে ২০ শতাংশ। এ সময় বাংলালিংকের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।’
দেশের মোবাইল ফোনের বাজার আগামীতে আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ জন্য এ খাতে বিনিয়োগকে সহজ করার জন্য ভালো ভালো উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন বাংলালিংকের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘নিম্ন আয়ের গ্রাহকদের ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ নিম্ন আয়ের মানুষকে মোবাইল সেবার অন্তর্ভুক্ত করা গেলে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি আরো গতিশীল হবে। ফলে সরকারের নেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্যোগও কার্যকর হবে।’
বাংলালিংকের বর্তমান গ্রাহকসংখ্যা প্রসঙ্গে শিহাব আহমাদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরুর প্রথম বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রাহকসংখ্যা পৌঁছে যায় ১০ লাখে এবং অক্টোবর ২০০৬-এর মধ্যে পৌঁছায় ৩০ লাখ। এরপর মাত্র দুই বছরের মাথায় ৭১ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ডিসেম্বর ২০০৭-এর মধ্যে বাংলালিংক গ্রাহকসংখ্যায় তৎকালীন একটেলকে (বর্তমানে রবি) পেছনে ফেলে পরিণত হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইলসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে বাংলালিংকের গ্রাহকসংখ্যা তিন কোটিরও বেশি, যা দেশের মোট মোবাইল ব্যবহারকারীর ২৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বলে তিনি জানান।
বাংলালিংকের থ্রিজি সেবাকে সবচেয়ে উচ্চগতির উল্লেখ করে শিহাব আহমাদ বলেন, ‘নতুন কিছু করো’ এই স্লোগানকে ধারণ করে বাংলালিংক তার গ্রহকদের নিত্যনতুন সেবার প্রবর্তন করে আসছে। দেশের অন্যান্য অপারেটরের চেয়ে বাংলালিংক সবচেয়ে গতিশীল থ্রিজি সেবা দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। এই সেবাকে আরো গ্রাহকবান্ধব করতে নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সহায়তায় বাংলালিংক সদা তৎপর। শিহাব আহমাদ বলেন, করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলালিংক তার দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিবছরই সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড ও পরিবেশ সংরক্ষণে বাংলালিংক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। বাংলালিংকের সিএসআর কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পরিষ্কার প্রকল্প এবং আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপ ডে পালন, অনাথ আশ্রমে অনুদান হিসেবে কম্বল বিতরণ, হজক্যাম্পে হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, রমজানে পানি ও খেজুর বিতরণ এবং অনাথ আশ্রমে ইফতারের ব্যবস্থা এবং অবহেলিত শিশুদের জন্য আইসিটি সাপোর্ট: কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে দেওয়া ইত্যাদি।