অনূর্ধ্ব–২১ হকি: বাংলাদেশ হেসেখেলেই চ্যাম্পিয়ন
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৬:০০,অপরাহ্ন ০৭ ডিসেম্বর ২০১৪
অনলাইন ডেস্ক: আরমানিটোলা স্কুলের একদল তরুণ বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এসেছিল। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের ভিআইপি গ্যালারি সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখল এই দলটি। বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা ছোট ছোট পতাকা হাতে দেখা মিলল অনেক উৎসাহী দর্শকের। ব্যানার, প্ল্যাকার্ডও কারও কারও হাতে।
এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপে প্রতিটি ম্যাচে দাপটের সঙ্গে জেতা বাংলাদেশ কাল ফাইনালেও আনন্দে মাতিয়ে রাখল দর্শকদের। ওমানকে এবার ৪-০ গোলে উড়িয়ে এএইচএফ কাপ অনূর্ধ্ব-২১ বিভাগে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তৃিপ্ত নিয়ে বাড়ি ফিরল সবাই। লিগ পর্বে এই ওমানের বিপক্ষে এসেছে ৭-০ গোলের বিশাল জয়। ওমান ফাইনালেও দাঁড়াতে পারবে না, অনুমানটা সতি৵ হলো মাঠেও। বাংলাদেশের চার গোলের তিনটিই এসেছে পেনাল্টি কর্নারে। যার দুটি ১৭ ও ৩৭ মিনিটে, গোলদাতা খোরশেদ। ১০ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা এই পেনাল্টি কর্নার বিশেষজ্ঞ। ২৩ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে লক্ষ্যভেদ করেন আশরাফুল। একমাত্র ফিল্ড গোলটি সারোয়ারের, ৫০ মিনিটে ৪-০ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। .গোলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। কিন্তু শেষ ১০ মিনিট একটু রক্ষণাত্মকই খেলেছে বাংলাদেশ।
পেনাল্টি কর্নারে সাফল্য পেতে সারোয়ার ও খোরশেদকে নিয়ে অনুশীলনে বিস্তর কাজ করেছেন কোচ মামুনুর রশীদ। তাই পেনাল্টি কর্নার আদায়ে বেশ তৎপরই দেখা গেছে বাংলাদেশকে। যখন দল পেনাল্টি কর্নার পেয়েছে, খোরশেদ ছিলেন সাবলীল। হিটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য।
বাংলাদেশ গোলরক্ষক অসীম গোপ টুর্নামেন্টজুড়ে ছিলেন অতন্দ্রপ্রহরী। একটি গোলও হয়নি তাঁর বিপক্ষে। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ফাইনালেও কয়েকটি গোল বাঁচিয়েছেন। এই সাফল্যের অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতীয় দলের সাবেক পাকিস্তানি গোলরক্ষক কোচ মনসুর আহমেদের কথাই বললেন আগে, ‘মনসুর স্যার একবার বলেছিলেন, কোনো কোনো টুর্নামেন্টে একটিও গোল খাওয়া যাবে না। সেই লক্ষ্য নিয়েই এবার খেলতে নামি। ভাগ্য ভালো, একটিও গোল হয়নি আমার বিরুদ্ধে। তা ছাড়া রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় আগের ম্যাচগুলোতে আমাকে বড় পরীক্ষা দিতে হয়নি।’
সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার হাতে উচ্ছ্বসিত খোরশেদ এই পুরস্কার তাঁর বাবা-মাকে উৎসর্গ করেছেন। ‘সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে আমার’—বলছিলেন এই তরুণ।
জাতীয় দলের সাবেক জার্মান কোচ গেরহার্ড পিটার ব্যবসায়িক কাজে এসেছেন ঢাকায়। ম্যাচ দেখতে কাল চলে এলেন প্রেসবক্সে। বাংলাদেশ দলের প্রশংসাই করলেন তিনি, ‘ওমানের চেয়ে ভালো খেলেছে বাংলাদেশ।’
ফাইনালেও বাংলাদেশ দল সহজে জিতবে এটা বোধ হয় ধরেই নিয়েছিলেন ওমানের কোচ অলিভার কার্জ। বাংলাদেশের প্রশংসাই ঝরল তাঁর কণ্ঠে। একই সঙ্গে বললেন, ‘আমাদের এই ছেলেদের অভিজ্ঞতা অনেক কম। তবে গত ম্যাচের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে খেলায়। আমি সন্তুষ্টই।’ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ কতটা খুশি সেটি না বললেও চলছে।