যেকোন দিন পলাতক রাজাকার হাসান আলীর রায়
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪৪:২৩,অপরাহ্ন ২০ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কিশোরগঞ্জের পলাতক হাসান আলীর বিরুদ্ধে যে কোনও দিন রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার একথা জানিয়েছেন।
আজ শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা মামলা যথাযথভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। সব ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে। সেসবের ভিত্তিতে আমরা আসামির মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়েছি।’
রাষ্ট্রপক্ষ মামলায় ২৬ জন সাক্ষী হাজির করেছেন। অপরদিকে, আসামি পলাতক হওয়ায় বিবাদিপক্ষের কোনও সাক্ষী ছিল না।
আসামিপেক্ষর রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী আবদুস শুক্কুর খান বলেন, তার মক্কেল খালাস পাবে বলে তিনি মনে করেন। কেননা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা যে তথ্য প্রমাণ দিয়েছে তাতে অসঙ্গিত আছে। যেগুলো তিনি ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টিতে এনেছেন।
গত বছর ২৯ জুন হাসান আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা। একাত্তরের ২৭ এপ্রিল কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার সাচাইল পূর্বপাড়া গ্রামের লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে হাসান আলী জড়িত ছিলেন।
পলাতক হাসান আলীর বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ রয়েছে। প্রথম অভিযোগ, একাত্তরের ২৭ এপ্রিল তাড়াইল থানার সাচাইল পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আহমদ ওরফে হাচু ব্যাপারীর সাতটি ঘর লুট করে আগুনে পুড়িয়ে দেন হাসান আলী, সহযোগী রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা। পরে হাচু ব্যাপারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ, ২৩ আগস্ট হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা কোনাভাওয়াল গ্রামের তফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়াকে হত্যা করে দুটি ঘর লুট ও দুজনকে অপহরণ করে।
তৃতীয় অভিযোগ, ৯ সেপ্টেম্বর হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা শিমুলহাটি গ্রামের পালপাড়ার অক্রুর পালসহ ১০ জনকে হত্যা করে ঘরবাড়িতে আগুন দেয়।
চতুর্থ অভিযোগ, ২৭ সেপ্টেম্বর বড়গাঁও গ্রামের মরকান বিলে বেলংকা রোডে সতীশ ঘোষসহ আটজনকে হত্যা করে হাসান আলী ও সহযোগী রাজাকাররা।
পঞ্চম অভিযোগ, ৮ অক্টোবর হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা আড়াইউড়া গ্রামের কামিনী কুমার ঘোষ ও জীবন ঠাকুরকে হত্যা করে ঘরবাড়ি লুট করে।
ষষ্ঠ অভিযোগ, ১১ ডিসেম্বর হাসান আলী ৩০-৪০ জন রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনা নিয়ে সাচাইল গ্রামের শতাধিক ঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং গ্রামের আবদুর রশিদকে হত্যা করে।
হাসান আলীর বাবা সৈয়দ মোসলেম উদ্দিন একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও কিশোরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাসান আলী রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান। গত বছর ৩ এপ্রিল তাকে গ্রেফতারের জন্য ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারি করলেও এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।