ভারতকে টাইগারদের ফাঁদে ফেলার মিশন
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১০:৪২,অপরাহ্ন ২৫ মে ২০১৫
খেলাধুলা ডেস্ক::
বাংলাদেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তথা বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব-আল-হাসান। আসন্ন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজকে ঘিরে ভারতীয় দলের কাছে সবচেয়ে পরিচিত মুখ। এমনকি বাংলাদেশের হয়ে কোন খেলোয়াড়ের ভারত সম্পর্কে সবথেকে বেশি জানাশোনা, শুধুযে জানাশোনা তা বললে ভুল হবে ভারতীয় ক্রিকেট সম্পর্কে সবথেকে বেশি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে সবথেকে যার প্রতি থাকবে সবথেকে বেশি আকাঙ্খা এবং আশা।
ভারতীয় দল আগামি ৭ জুনে বাংলাদেশে এসে ১০ জুন থেকে শুরু হবে ভারত বধের নতুন মিশন। শুধু মিশন বললে ভুল হবে ভারতের সাথে এখন পর্যন্ত কোন টেস্ট জয়ে সাধ মেটেনি বাংলাদেশের। সুতরাং ব্যাপারটি বাংলাদেশের জন্য অনেকটা প্রথম জয়ের স্বাধের মিশন বলা যায়।
বাংলাদেশের সাথে কোহেলিদের তিনজন খেলোয়াড় ছাড়া টেস্ট না খেললেও অন্য টেস্ট দলের সাথে এই দল তাদের টেস্ট কুশলি খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় করেছে অনেকবারই। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে খেলা শেষ টেস্টে বাংলাদেশকে অনেকটা ধরাশায়ী করেই হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু তাতে কি সেই দলে যে ছিল শচিন টেন্ডুলকার, শেওয়াগ, রাহুল দ্রাভিড এবং ধনিদের মত বাঘা বাঘা খেলোয়াড়। এখন শুধু অভিক্ষ খেলোয়াড় বলতে আছেন হরভজন সিং আর একমাত্র ব্যাটসম্যান মুরালি বিজয়। তাছাড়া ইশান্ত শর্মা অন্যান্য বোলারদের ভিড়ে ছিতকে পরবেন বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।
অন্যদিকে বাংলাদেশ দলের বাংলাদেশ দল অনেকটা এগিয়ে আছে এইসব অভিক্ষতার ভিড়ে। দলে আছে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল, সব ক্রিকেটে সফল খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, পাকিস্তান সিরিজে সফল ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস, বাংলাদেশের লিটল মাস্টার মুশফিকুর রহিম, ভারত ভধের মন্ত্র জানা মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ এবং বাংলাদেশের স্লিঙ্গা বোলার রুবেল হোসেন। সবথেকে বড় ব্যাপার হল এদের সবাই খেলেছেন ভারতের সাথে টেস্ট ক্রিকেট, সুতরাং ভারত বধের ব্যাপারে ক্রিকেট বোদ্ধাদের বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতে হবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহই থাকার কথা নয়।
ভারতের সাথে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম টেস্ট খেলেও দীর্ঘ ১৫ বছরে বাংলাদেশ খেলেছে মাত্র ৮ টেস্ট, যার সাতটি জিতেছে ভারত এবং ১টি টেস্ট ছিল বৃষ্টিবিঘ্নিত ড্র। বড় কোন সফলতা না থাকলেও সর্বশেষ ৫ বছর আগের সেই বাংলাদেশ আজ আর নেই, তা বাংলাদেশ আজ ভালোভাবেই প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছে।
অন্যদিকে একদিনের খেলাতে দেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হয়েছে মোট ২৯ বার। যার মধ্যে ভারত জিতেছে ২৫ বার, বাংলাদেশ ৩ বার এবং ১ আক্তি ম্যাচ বৃষ্টির জন্য মাঠে গড়ায়নি। মজার ব্যাপার হল বাংলাদেশ ভারতের সাথে খেলা শুরু করেছে ১৯৮৮ সাল থেকে আর বাংলাদেশের সব গুলো জয়ই এসেছে ২০০৪ এর পর। সর্বশেষ জয়টি এসেছে ২০১২ সালে শের-ই-বাংলা জাঁতীয় স্টেডিয়ামে। ম্যাচটির সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রান সাকিব-আল-হাসান।
আইসিসির দলীয় রাঙ্কিংয়ে ভারত থেকে অনেক দূরে থাকলেও বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস আর ভারতীয় দলের ক্লান্ত ক্রিকেটারদের আলোকে বাংলাদেশই এবারের ‘ফেবারিট’ বলা যেতেই পারে। আর এই ‘ফেবারিট’ বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়ামে বাস্তবতার পাখা মেলবে, এই বিশ্বাস যে ক্রিকেটপ্রেমীদের তা বোলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের স্বপ্ন আর সাধনার জয় আর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিশোধের আশায় মাঠে নামবে টাইগাররা। এই সব সপ্ন সত্যিকারে রূপদানের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে কিছুদিন। একটা কথা বলে শেষ করা যেতে পারে বাংলাদেশের এমন উষ্ণ রক্তের সিরিজ আগে কখনো হয়নি। তবে শুধু রক্ত উষ্ণ করলেই চলবে না, উষ্ণ রক্তের বিষয়টা মনের মধ্যে রেখে ভারতকে ফেলতে হবে টাইগারদের ফাঁদে।