দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:০৫:৩৬,অপরাহ্ন ০৩ মে ২০১৫
প্রবাস ডেস্ক :: দক্ষিণ আফ্রিকার পিটুরিয়া শহরের সোসাঙ্গবী এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে আহত বাংলাদেশি যুবক ইব্রাহিম (৪২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শনিবার (০২ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ইব্রাহিম মারা যায়। এ ঘটনায় আহত হয়ে নিহতের ভাই ইসমাইল এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
৩০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দক্ষিণ আফ্রিকার পিটুরিয়া শহরের সোসাঙ্গবী এলাকার সন্ত্রাসীদের হামলা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ব্যবসায়ী দুই বাংলাদেশি সহোদর।
নিহত ইব্রাহিম ও আহত ইসমাইল নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রামপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বন্ধু দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী মোজাম্মেল জানায়, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার সন্ত্রাসীরা দুই ভাইকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে টাকা পয়সা ও মালামাল লুটপাট করে। যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাদের দোকানটিতে আগুনে ধরিয়ে দেয়।
এতে ইব্রাহিম ও ইসমাইল অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আহতাবস্থায় ওই দুই সহোদরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হারাংকুয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগুনে ইব্রাহিমের শরীরের ৬০ শতাংশ, ইসমাইলের শরীরের ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়। শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইব্রাহিম মারা যায়।
নিহত ইব্রাহিমের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, তার বড় ছেলে ইব্রাহিম ২০১১ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় যায়। সেখানে পিটুরিয়া শহরের সোসাঙ্গবী এলাকায় নিজেরাই মুদি দোকান নিয়ে ব্যবসা শুরু করে।
দুই মাস আগে তার সঙ্গে ছেলে ইব্রাহিমের শেষ কথা হয়। কিছুদিনের মধ্যেই তার বাড়ি আসার কথা ছিল। সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের দেখতে এবং নতুন করে ঘর তৈরির ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল ইব্রাহিম।
দেশে এলে ইব্রাহিম তার ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে নোমান (১৩) ও প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া সোহাকে (৭) নতুন জামা-কাপড়, খেলনা কিনে দেওয়ার কথা ছিলো। এর আগেই, তিনি সন্ত্রাসীদের হামলায় না ফেরার দেশে চলে গেলো। সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো।
চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে ইব্রাহিম ছিল চতুর্থ। দুই মাস আগে ইব্রাহিমের মা আশারাফি খাতুনও মারা যান। তিন সপ্তাহ আগে ছোট ভাই ইসমাইল দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ভাইয়ের দোকানে কাজ শুরু করে।
ইব্রাহিমের মৃত্যুর সংবাদে তার পরিবারে ও গ্রামবাসীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইব্রাহিমের মৃত্যুর সংবাদে তার স্ত্রী নিপা বেগম দুই সন্তানকে নিয়ে নির্বাক হয়ে আছেন। পরিবারের দাবি নিহত ইব্রাহিমের মৃতদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার।