তবুও বঙ্কিমের স্মৃতি…
প্রকাশিত হয়েছে : ২:২৮:১৭,অপরাহ্ন ১৫ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
কালবৈশাখী ঝড় কেড়ে নিয়েছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত বকুল গাছ। কিন্তু কেড়ে নিতে পারেনি খুলনার মানুষের বর্ষবরণের স্থানটিকে। দুইশত বছরের অধিক সময় ধরে খুলনা জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিল গাছটি। কিন্তু ৫ এপ্রিল রোববার বিকেলে কালবৈশাখী ঝড়ে সেটি ভেঙে যায়।
ঐতিহাসিক এ বকুলতলায় প্রতিবছর ১ বৈশাখ আয়োজন করা হয় পানতা ইলিশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গাছটি ভেঙে যাওয়ায় অনেকে ভেবেছিলেন এখানে আর বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে না। কিন্তু খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ বছরও বকুল গাছটি না থাকলেও ভেঙে যাওয়া গাছতলায় খুলনার বর্ষবরণের প্রধান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভোরে পান্তা ইলিশ খেয়ে নেচে-গেয়ে বর্ষবরণের উৎসবে মাতে সাংস্কৃতিক কর্মীরা। প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা এখানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল।
সাংস্কৃতিক কর্মী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র নেই। নেই তার স্মৃতি ধন্য বকুল গাছটি। মূর্ততা ও শূন্যতা নিঃশব্দে জায়গা করে নিতে পারেনি। এখানে এলেই বঙ্কিমের অশরীরী বিচরণ অনুভব করা যায়। গাছটি ভেঙে যাওয়ার পরও এখানে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় তিনি খুলনা জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
জানা যায়, ভৈরব-রূপসা বিধৌত খুলনা জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক বকুল গাছ। তিনি এ বকুল গাছের নিচে বসে সরকারি কাজ শেষে ‘কপালকুন্তলা’ উপন্যাসের বেশ কয়েকটি অধ্যায় রচনা করেছিলেন।
খুলনাঞ্চলের ইতিহাস গবেষক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী বলেন, এ বকুল গাছের নিচে বসে বঙ্কিমচন্দ্র অনেক বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতের অনেক সময় কাটিয়েছেন।উপভোগ করেছেন নদীর অপূর্ব রূপ।
প্রখ্যাত গবেষক অধ্যাপক মুহম্মদ আবু তালিবের উদ্ধৃতি দিয়ে গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী বলেন, যতদুর জানা যায় খুলনা জেলার প্রথম স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বঙ্কিমচন্দ্রের কাছ থেকেই খুলনা জেলার ধারাবাহিক সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত হয়। স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্রের খুলনা থেকেই সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত হয়। তার প্রথম উপন্যাস ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ ও‘রাজমোহন পত্নী(ইংরেজি), খুলনায় ম্যাজিস্ট্রেট থাকা কালেই রচনা করেছিলেন।
এ বকুল গাছটির তলায় বসে বই পড়েছেন ও তৈরি করেছেন বইয়ের পাণ্ডুলিপি।সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নেই। তার বাসভবনটি আজও আছে। তবে, বাসভবনটি বিভিন্ন সময়ে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়েছে। ঐতিহাসিক বকুলতলায় প্রতিবছর ১ বৈশাখ আয়োজন করা হয় পানতা ইলিশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।