ওরা বাংলাদেশি হতে চায়
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৩:৩৩,অপরাহ্ন ১২ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ছিটমহলের বাসিন্দারা এখন বাংলাদেশি নাগরিক হতে চান। সেই দাবিতে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বাংলাদেশে বসবাসরত ভারতীয় ছিটমহলের নাগরিকরা।
ছিট মহলবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১১ সালে ভারত সরকারের উদ্যোগে ছিটমহলবাসীদের মধ্যে ভারতে যেতে ইচ্ছুকদের ফরম পুরণের মাধ্যমে তালিকা করা হয়। সে সময় বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের ১১১টি ছিট মহলের ১৪৩ টি পরিবার স্বেচ্ছায় ভারত যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ফরম পুরণ করেন। কিন্তু এখন তারা আর ভারত যেতে চাচ্ছেন না। তারা বাংলাদেশের নাগরিক হতে চান।
নাজিরগঞ্জ দইখাতা ছিটমহলের সুশিল চন্দ্র বলেন, ‘ফরম পুরণের সময় বলা হয়েছিল ভারতে গেলে আট বিঘা জমি, ঘর বাড়ি ও কাজের সংস্থান করে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে পুনর্বাসন করা হবে। সে জন্য আমরা ভারতে যেতে চাই না। যেহেতু বাংলাদেশে আমাদের জন্ম হয়েছে তাই বাংলাদেশের নাগরিক হয়েই মরতে চাই।’
গারাতি ছিটমহলের নির্মল কুমার বলেন, ‘আমরা ছিটমহলবাসী আর বাংলাদেশি ভাইয়েরা এক সঙ্গে মানুষ হয়েছি। আমরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাই।’ শালবাড়ি ছিটমহলের হরিদাশ চন্দ্র বলেন, ‘ভারত সরকার জমি-ঘরবাড়ি দেবে বলে ফরম পুরণ করেছিলাম। কিন্তু এখন ভারত সরকার বলছে আমাদের পুণর্বাসন করবে। তাই আমরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাই।’
নাজিরগঞ্জ দইখাতা ছিটমহলের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক জানান, এই ছিটমহলে ভারত যাওয়ার জন্য ৪১ টি পরিবারের ফরম পুরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন তারা আর ভারত যেতে চান না। তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চান।
পঞ্চগড়-নীলফামারী জেলার ছিটমহল সমন্বয় কমিটির সভাপতি মফিজার রহমান বলেন, ‘২০১১ সালে ব্যক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের ১৪৩টি পরিবার ভারত যেতে চাইলেও এখন আর তারা যেতে চাচ্ছেন না।’
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিট মহলের মানুষ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে এক ধরনের অবরুদ্ধ জীবনযাপন করে আসছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে।
দীর্ঘ দিনের এই সমস্য সমাধানে সম্প্রতি ভারত সরকার সম্মতি প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিটমহল বিনিময়ের ঘোষণা দেন। এতে উভয় দেষের ছিটমহলগুলোতে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।