২০০৪ সালে ৪ জুনের ঘটনায় নানক-আজম জড়িত ছিল না
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১৫:০৬,অপরাহ্ন ২৬ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ২০০৪ সালে ৪ জুন আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের পূর্বরাতে শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতল বিআরটিসিরি বাস পোড়ানোর ঘটনায় যুবলীগ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম জড়িত ছিল না।
যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং বর্তমান পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এ ঘোষণা দেন।
সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘২০০৪ সালে ৪ জুন আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের পূর্বরাতে শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতল বিআরটিসিরি বাস পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়াকে পাষ- বলে দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যার (খালেদা জিয়া) সন্তান মারা গেছে, তিনি পাষ-। আজও হরতাল অবরোধ দিয়ে দেশব্যাপী বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করছেন।
আদালতের মীমাংসিত বিষয়ে খালেদা জিয়া আপনাদের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছেন, এতে আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেব না। এখন আমরা যদি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে যায়, আমরা জাতির কাছে ধিকৃত হবো।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, প্রায় ১১ বছর পূর্বের একটি ঘটনা সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য আপনাদের মাধ্যমে পুনরায় দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য আজ আপনাদের এখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বিগত ২০০৪ সালেও আপনাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ও সেই সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব লুৎফুজ্জামান বাবরের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রচিত নাটকের যবনিকাপাত ঘটেছিল। আজও যারা সে নাটক পুনঃমঞ্চস্থ করতে চায়, আপনাদের ক্ষুরধার লেখনী ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তারও যবনিকাপাত ঘটবে।’
নানক বলেন, ‘বিগত ২০০৪ সালের ৪ জুন রাত ৮টার দিকে শেরাটন হোটেলের নিকট বিআরটিসির একটি দ্বিতলা বাসে অগ্নিসংযোগে ১১ জন নিরীহ বাসযাত্রী নির্মমভাবে নিহত হন। এই বর্বরোচিত ঘটনার সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে জড়ানোর লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একটি নাটক সাজানোর অপচেষ্টা সম্পর্কে আমরা ১৪ জুলাই ২০০৪ ইং তারিখে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সমগ্র জাতির সামনে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম। আমরা সেদিন বলেছিলাম, নিñিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে স্পর্শকাতর এলাকায় গান পাউডার অথবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকের সাহায্যে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিরোধীদলীয় কোনো নেতা বা কর্মীর পক্ষে সম্ভব নয়।
এর কারণ ব্যাখ্যায় নানক বলেন, ঐদিন শেরাটন হোটেলে অবস্থানকারী মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সরকারের উদ্যোগে নেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মানুষ মারার দায় চাপিয়ে জনগণের প্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের ডাকা ৫ জুন ২০০৪ এর হরতালের পূর্ব রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দ্বারা পুলিশের সহায়তায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয় নাই। বরং প্রকৃত সত্য উদঘাটনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের মিথ্যাচার ও অনুর্বর মস্তিস্কের সাজানো নাটকটি জাতির কাছে হাস্যাস্পদ হয়ে উঠে। কিন্তু আমরা আজ আবার লক্ষ করছি ভুল রাজনীতির চোরাবালিতে নিমজ্জমান বেগম খালেদা জিয়া লজ্জার মাথা খেয়ে বিভিন্ন জনসভায় তার বক্তব্যে এ ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করতে চান। জাতির কি দুর্ভাগ্য যে ষড়যন্ত্রের জন্য জাতির সামনে দুঃখ প্রকাশ করার কথা, তা তো নয়ই বরং জাতিকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য এই ঘটনার দায় পুনরায় আমাদের উপর চাপানোর অপচেষ্টা। কি নির্লজ্জ মিথ্যাচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা.বদিউজ্জামান ডাবলু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক শামীম, এসএম কামাল, সুজিত রায় নন্দি প্রমুখ।