স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৬:২২,অপরাহ্ন ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
মোঃ কামরুজ্জামান, স্টকহোম :
২১ ফেব্রুয়ারি যথাযথ মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় স্টকহোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে ।
মহান শহীদ দিবসের এ আয়োজনে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বপ্রণোদিত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান প্রানবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল- পবিত্র কুর’আন থেকে তিলওয়াত, জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, এক মিনিট নীরবতা পালন, বাণী পাঠ, প্রতীকী শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্প-স্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রদূতের স্বাগত বক্তব্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজ।
রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারোয়ার, দূতাবাসের প্রথম সচিব ও চ্যান্সারী প্রধান মোঃ কামরুজ্জামান এবং কর্মকর্তাবৃন্দ মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন।
দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রতীকী শহীদ মিনারের বেদী স্থাপনের ফলে এবারের অনুষ্ঠান বর্ণাঢ্য রূপ পায় এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী শৃংখলার সাথে সারিবদ্ধভাবে এ বেদীতে পুষ্প অর্পণ করেন। ফলশ্রুতি স্বরূপ, সবাই প্রবাসে থেকেও দেশজ অনুভূতিতে উদ্বেল হয়ে ওঠে। পুষ্প-অর্পণের পর্ব শেষে, রাষ্ট্র্রদূত জনাব মোঃ গোলাম সারোয়ার তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ভাষা-শহীদদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণ মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগ, অনুভূতি, মমত্ববোধ ও দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ বলে বিশেষভাবে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলা ভাষা-ভাষীই বিশ্বের একমাত্র জাতি যারা নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয় এবং তাঁদের এ আত্মহুতিই আমাদের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য ও স্বাজাত্যবোধ সমুন্নত রেখে স্বাধীকার তথা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের দিকে ধাবিত করে।
তিনি আরো বলেন যে, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক মহান ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি মূলতঃ বিশ্বের সব ভাষা-ভাষীর প্রতি শ্রদ্ধা ও স্বাতন্ত্র্যের পরিচায়ক। তাই সবাইকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে মাতৃভাষার ব্যাপক চর্চা ও লালনের মাধ্যমে স্বদেশ ও মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ ও অনুভূতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়ার উদাত্ত আহবান জানান তিনি।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানপর্বে প্রবাসী শিল্পীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ পর্বে উপস্থিত শিল্পী ও কলা-কুশলীবৃন্দ গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার শিল্পী ও কলা-কুশলীবৃন্দকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন। পরিশেষে নৈশভোজ পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।