সীমানা না মানা প্রেমের পরিণতি জেল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০০:৫৬,অপরাহ্ন ১৬ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: প্রেম মানে না জাতিভেদ, ধর্ম-অধর্ম। এমনকি প্রেম মানে না কূটনীতির কুটিল আচার, দেশ ও সীমানাও। প্রেমের এমনই শক্তি যে, দুই হৃদয়ের ভালবাসার কাছে নতজানু হয়ে যায় পার্থিব সব কালা-কানুন। তার সর্বশেষ নজির স্থাপন করেছেন ভারতের আসাম রাজ্যের বাইশ বছরের তরুণী পারভীন।
সম্প্রতি ভারত ছেড়ে বাংলাদেশি প্রেমিক আব্দুল হালিমের (২৫) হাত ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু পালিয়ে এসেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। প্রেমের উন্মাদনা যেন হার মানলো কূটনীতির শেকলের কাছে। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে তরুণীকে এখন টানতে হচ্ছে জেলের ঘানি। আর যুবক আব্দুল হালিম? তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তার প্রেমিকা পারভীনকে ছাড়া তিনি বাঁচবেন না। তাই তাকেও পারভীনের সঙ্গে গ্রেপ্তার করে নিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের কানাইঘাটে। পারভীনকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে এবং হালিমকে অনুপ্রেবেশে সহযোগিতার দায়ে অভিযুক্ত করে এসআই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কানাইঘাট দিঘীরপার ইউপির মানিকপুর গ্রামের সমছুদ্দিনের পুত্র আব্দুল হালিম ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ‘ক্যারেলিয়ায়’ কয়লা খনিতে শ্রমিকের কাজ করতো। এ সুবাদে আব্দুল হালিম খয়লা খনির কাজে থাকা তরুণী পারভীন বেগমের এক চাচাতে ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে। ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার কাটিগড়া থানার সরশপুর গ্রামের নামর আলীর মেয়ে পারভীন সুলতানা চৌধুরীর সাথে দুই বছর ধরে তার মন দেয়া-নেয়া চলে।
কিন্তু পারভীনের পরিবারের সদস্য এ সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় প্রেমের সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে এক সপ্তাহ আগে পারভীন হালিমের হাত ধরে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। তারা আব্দুল হালিমের বাড়ি কানাইঘাটের মানিকপুর গ্রামে বসবাস শুরু করে। থানা হাজতে থাকা আব্দুল হালিম জানায়, তারা একে অন্যকে ভালোবাসে। ধর্মীয় শরীয়ত মোতাবেক তারা বিয়েও করেছে। পারভীন আক্তার চৌধুরী জানিয়েছে সেও আব্দুল হালিমকে ভালোবাসে। তাকে ছাড়া সে বাঁচবে না।
এদিকে আত্মীয়-স্বজন পারভীনের পালিয়ে আসার বিষয়টি বুঝতে পেরে বাংলাদেশে বসবাসরত তাদের স্বজনদের বিষয়টি অবহিত করেন। মেয়ের স্বজনরা খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে জানতে পারেন যে, পারভীন প্রেমিক আব্দুল হালিমের মানিকপুর গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
পরে তারা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরীকে জানালে তিনি লোকজনের সহায়তায় প্রেমিক যুগলকে কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আউয়াল চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’