সিলেটে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ, ফার্মেসিতেই চিকিৎসা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৬:৪৯,অপরাহ্ন ২৫ মার্চ ২০২০
করোনার প্রভাব পড়েছে সিলেটের ডাক্তার পাড়াতেও। নগরীর ডাক্তার পাড়া হিসেবে পরিচিত সিলেট স্টেডিয়ামের অধিকাংশ প্রাইভেট ডাক্তার নিরাপত্তা জনিত কারনে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা চেম্বারের সামনে বন্ধের নোটিশও সাঠিয়ে রেখেছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন সিলেটের রোগীরা। নিরুপায় হয়ে এসব রোগী এখন ভীড় করছেন স্থানীয় ফার্মেসিতে। রোগের আলামত বলে ফার্মেসির ঔষধ বিক্রেতারা রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন সিলেটের বিভিন্ন জায়গায়।
গত শনিবার পর্যন্ত নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেট, ওসমানী মেডিকেল রোড, ইবনে সিনা হাসপাতাল, চৌহাট্রা এলাকায় অসংখ্য প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তাররা নিজেদের প্রোটেকশন রেখে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গেছে। কিন্তু রবিবার থেকে করোনারভাইরাসের প্রভাব সারা দেশে পড়লে সিলেটের অধিকাংশ প্রাইভেট ডাক্তাররা নিজেদের চেম্বার বন্ধ করে রেখেছেন। সামান্য কয়েকজন ডাক্তার প্রাইভেট রোগী দেখছেন বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় শহর ও গ্রামের রোগীরা ফার্মেসির উপর ভরসা রাখছেন। ফার্মেসিতে বলে প্রাথমিক ঔষধ নিচ্ছেন বলে সিলেটভিউকে বেশ কয়েকজন রোগী জানিয়েছেন।
বন্দর বাজারের লালদীঘির পাড়ে আল- হেরা ফার্মেসির মালিক মো. ওয়ারিছ উদ্দিন জানিয়েছেন, প্যারাসিটামল বিক্রি হচ্ছে খুব বেশি। এক প্রশ্নের জবাবে সিলেটভিউকে তিনি জানান, আমরা কাউকে কোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ দিচ্ছি না। পরিচিত কোন ডাক্তার ফোন করে বললে আমরা তখন অন্য কোন ঔষধ দিচ্ছি রোগীদের। তবে তিনি জানিয়েছেন, অনেক রোগী প্রতিদিন বিভিন্ন রোগ নিয়ে দোকানে ভীড় করেন।
কানাইঘাটের কাড়াবাল্লাহ গ্রামের জনৈক ব্যক্তি পেটে ব্যথা নিয়ে তিনি বাড়িতে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে সিলেটের বেশ কয়েকজন ডাক্তার দেখিয়েছেন। কিন্তু উন্নতি না হওয়ায় এখন ব্যাথা আরো বাড়ছে। এখন অন্য কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারছেন না চেম্বার বন্ধের কারনে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলা হাসপাতালে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। যার কারণে উপজেলা হাসপাতালের ডাক্তারের উপর তিনি ভরসা রাখতে পারছেন না।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ ) সিলেট জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ডাক্তার রুকন উদ্দিন আহমদবলেন, অনেকে রোগী দেখছেন। কিন্তু আমরা কাউকে জোর করে রোগী দেখতে বলতে পারব না। কারণ রোগী দেখতে করোনাভাইরাস থেকে ডাক্তাররা নিজেদের নিরাপদ রাখতে যে ধরণের প্রোটেকশন জরুরি সেগুলো বাজারে সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার নিজেকে নিরাপদ রাখতে একেকটি প্রোটেকশন একবারই ব্যবহার করা যায়। এছাড়া অনেক রোগী তার রোগের পূর্ব হিষ্ট্রি লুকিয়ে রাখেন। তিনি বলেন, তারপরও অনেক ডাক্তার নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, সিলেটের সকল সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সকল হাসপাতালে যাতে মানুষ চিকিৎসা পায় সে নির্দেশনা আমরা জানিয়ে দিয়েছি।