‘সালাহ উদ্দিনকে আটক করা হয়নি, পুলিশকেই প্রমাণ করতে হবে’
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০৫:৩১,অপরাহ্ন ২৮ মার্চ ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে যে আটক করা হয়নি, তা প্রমাণের দায়িত্ব পুলিশের বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রাজনীতি ও অবস্থানের কারণে একজন মানুষের হদিস মিলবে না, এটা কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক বর্ণ বৈষম্য বিলোপ দিবস’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপির উদ্দেশে ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে আপনারা ধরেননি বলে দাবি করছেন। বলছেন, তাকে খুঁজে বের করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করেনি তখনই বিশ্বাস করব, যখন দেখব দ্রুততম সময়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে জনসম্মুখে বা আদালতে হাজির করে পুলিশ জানিয়েছে, অমুক জায়গা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ড. মিজান বলেন, বাংলাদেশে যখন যে বিরোধী দলে থাকে, সে দল সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হয়। যদি আপনি শাসক দলের হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য পোয়াবারো। আর যদি বিরোধী দলের হয়ে থাকেন, আপনার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ পদে-পদে হতে পারে।
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর জন্য প্রশাসনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ব এজতেমার সময়ে কয়েক প্লাটুন র্যাব-পুলিশ সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে, নারায়ণগঞ্জেও তা হতে পারত।
ড. মিজান বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন জেলার ভূমি অফিসে আগুন দেওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। সংখ্যালঘুদের জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যারা করে, তাদের জমি বাজেয়াপ্ত করতে রাষ্ট্রকে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ ২০ দলীয় জোটের মুখপাত্র হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে চলে আসা লাগাতার হরতাল-অবরোধের সময় অজ্ঞাত স্থান থেকে তিনি বিবৃতি পাঠিয়ে কর্মসূচি জানান দিতেন। এমনই অবস্থায় তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অভিযোগ করেন, গত ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়িতে থেকে ডিবি পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে। যদিও পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সেমিনারটি দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে ড. মিজানুর রহমান ছিলেন প্রধান অতিথি। বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, প্রথম আলোর যুগ্মসম্পাদক মিজানুর রহমান খান। সভাপতিত্ব করেন মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ইঞ্জিনিয়ার মানস কুমার মিত্র। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফোরামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট উৎপল বিশ্বাস।
দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও পশুসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব হীরালাল বালা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ মাতুয়া মহাসংঘের সভাপতি সুব্রত ঠাকুর, সাংবাদিক-লেখক আবু সাঈদ খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার রেজওয়ানুল করিম। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশের কার্যকরী সভাপতি মুকুল রঞ্জন সিকদার।