সবাইকে ছাড়িয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে মহাকীর্তির অপেক্ষায় সাকিব
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪৩:২৪,অপরাহ্ন ৩১ মে ২০১৫
খেলাধুলা ডেস্ক::
ক্রিকেট থেকে একের পর এক গ্রেট অবসর নিয়েছেন বিভিন্ন কীর্তি গড়ে। কেউ গড়েছেন সবচেয়ে বেশি রানের কীর্তি , কেউবা ছুঁয়েছেন সবচেয়ে বেশি উইকেটের মাইলফলক। সবচেয়ে বেশি রান বা বেশি উইকেট ছাড়াও অনেকে করে নিয়েছেন বিভিন্ন অলরাউন্ড রেকর্ডটি। কিন্তু ক্রিকেটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কেউই কোন ক্রিকেটেই ১০ হাজার রান ও একসাথে ৪০০ উইকেটের বেশি রেকর্ডটি ছুতে পারেননি।
টেস্ট ক্রিকেটে এই কীর্তির অনেক কাছাকাছি পৌঁছেছেন মাত্র একজন ক্রিকেটার আর তিনি হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস। তিনি করছেন ১৬৬ ম্যাচে ১৩২৮৯ রান এবং ২৯২ উইকেটের কীর্তি, যা ক্রিকেটের ইতিহাসে আর কেউই করতে পারেনি। তবে ক্রিকেট ঈশ্বর খ্যাত শচিন টেন্ডুলকার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবথেকে বেশি রান এবং একমাত্র ১৫ হাজার রানের কীর্তিটি থাকলেও তার জীবদ্দশায় টেস্ট ক্রিকেটে পেয়েছেন মাত্র ৪৬ উইকেট।
এবার আসি একদিনের ক্রিকেটে, ৫০ ওভারের খেলায় ১০ হাজার রান ও ৪০০ উইকেটের খুব কাছাকাছি গেলেও শেষ পর্যন্ত আর এই কীর্তি গড়তে পারেননি শ্রীলঙ্কান মাতারা হ্যারিকেন নামে পরিচিত সনাথ জয়সুরিয়া, তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১০ হাজারি ক্লাব ও ৩০০ উইকেটের মাইলফলক ছুয়েছেন। তার ক্যারিয়ারটি সাজানো ছিল ৪৪৫ ওয়ানডেতে ১৩৪৩০ রান এবং ৩২৩ উইকেট দিয়ে।
এই ফরমেটের ক্রিকেটেও জ্যাক ক্যালিস করেছেন ১১৫৭৯ রান ও ২৭৩ উইকেটের কীর্তি। ক্রিকেট ঈশ্বর শচিন টেন্ডুলকার এই ফরমেটেরও সবথেকে বেশি এবং একমাত্র ১৮৪২৬ রানের রেকর্ডটি থাকলেও উইকেটের পেয়েছেন ১৫৪ টি। পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি এই রেকর্ডের কাছাকাছি গিয়ে ৩৯৮ ম্যাচ খেলে ৮০৬৪ রান ও ৩৯৫ উইকেট পেয়ে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
এখন কথা হল যারা এই রেকর্ডের কাছাকাছি গিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন, তাহলে কি এই রেকর্ডের মুখ ক্রিকেট আর কখনোই দেখবে না! যদি বলি পারবে, বয়স, দলগত পারফর্মেন্স ও ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যেভাবে এগুচ্ছেন তাতে এই রেকর্ডের একমাত্র দাবীদার বর্তমান ক্রিকেটের সেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশের প্রান সাকিব আল হাসান।
১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করা সাকিব ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরু করে খেলেছেন মাত্র নয় বছর। এই অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে নানান ভাবে প্রমান করে আজ দাড় করিয়েছেন ক্রিকেটের এক উচ্চতর শিখরে। মাত্র ১৫০টি একদিনের ক্রিকেট খেলে প্রায় ৩৫ গড়ে করেছেন ৪২১১ রান এবং পেয়েছেন ১৯৫ টি উইকেট। উপর ওয়ালা যদি সবকিছু ঠিক রাখে তাহলে আগামী ১০ থেকে ১২ বছর ক্রিকেট থেকে যদি ক্যারিয়ারে আরও ২০০টি একদিনের ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে পারেন, তাহলে এই রেকর্ডটি ছোঁয়া সম্ভব।
যতই দিন যাচ্ছে সাকিবের ক্রিকেট যেন দিন দিন আরও বেশি আলো ছড়াচ্ছে। এই ধারা যদি বজায় রাখতে পারেন তাহলে সাকিবই হবেন ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ১০ হাজারি ক্লাব ও ৪০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়া প্রথম এবং একমাত্র ক্রিকেটার।
একদিনের ক্রিকেটে সেরা বোলারের তালিকায় সাকিব আল হাসান ৬৭৬ পয়েন্ট নিয়ে আছেন অষ্টম অবস্থানে, টি-২০ তে আছেন ৬৬১ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম অবস্থানে এবং টেস্ট ক্রিকেটে আছেন ৬২৯ পয়েন্ট নিয়ে ২৯তম অবস্থানে। তাছাড়া টেস্ট এবং টি-২০ ক্রিকেটে বরাবরের মত সেরা অলরউন্ডার হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন। আর একদিনের ক্রিকেটে মাত্র ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে ৩৯৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন। ৪০২ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছেন শ্রীলঙ্কান ওপেনার ও অলরাউন্ডার তিলেক্রত্নে দিলশান।