মধ্যরাতে দরজা ভেঙে সাংবাদিককে আটক, সাজা
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৫:৩৩,অপরাহ্ন ১৫ মার্চ ২০২০
কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাসার দরজা ভেঙে সংবাদিক আরিফুল ইসলামকে তুলে নিয়ে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টার দিকে অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট আনসার সদস্যদের নিয়ে তার বাড়িতে যায়।
আটক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার বলেন, শুক্রবার গভীর রাতে অনেক লোকজন এসে আমাদের বাসার দরজা খুলে দিতে বলে। একপর্যায়ে ওনারা ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সাত আটজন মিলে আমার স্বামীকে মারতে শুরু করে। তাদের হাতে রাইফেল, পিস্তল সবই ছিল।
তিনি বলেন, তখন বারবার বলছিল, কয়দিন ধরে খুব জ্বালাচ্ছিস। গুলি করে দেবো। বলে আর মারে। ওর গায়ে কোন কাপড় ছিল না। আশেপাশের বাড়ির কাউকে সামনে এগোতে দেয়নি। সারা রাস্তা মারতে মারতে নিয়ে গেছে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, তাও বলেনি।
অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে জানা গেল, তাকে নাকি সঙ্গে সঙ্গেই মাদকের মামলায় এক বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে, যোগ করেন আরিফুল ইসলামের স্ত্রী।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, আমাদের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট হয়, আমরা শিডিউল করে দেই। অনেক সময় তারা মাদক, চোরাচালানের টাস্কফোর্সের অভিযানেও যায়, যেখানে ম্যাজিস্ট্রেট থাকেন। গত রাতেও এরকম কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছে। সেই অভিযানে ওই ব্যক্তিকে আটক করে সাজা দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ কারণে এই অভিযান বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি ওই ঘটনাই হতো, সেটা তো একবছর আগের কথা। এখানে আমি কিছু কাজ করেছি, সংস্কার কাজ.. সেখানে ওরা বলছে যে, আমার নামে….নামের কোন লক্ষণই নেই, সেটা আলাদা বিষয়, সেখানে সে স্যরি বলেছে বলে আমরা তো আর কিছুই বলি নাই। ওইটা যদি কোন বিষয় হতো, তাহলে তো তখনি আমরা কোন অ্যাকশনে যেতাম।
এখন ওইটার সঙ্গে এইটা মিলাচ্ছে তারা (সাংবাদিকরা), যোগ করেন তিনি।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগানকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে তিনি দোষ স্বীকার করায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কুড়িগ্রাম থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, এ ধরনের অভিযানের ব্যাপারে তাদের কাছে কোন তথ্য ছিল না।
সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি