ব্রিটিশদের ‘বাড়ির পথ’ দেখালো বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১৯:১২,অপরাহ্ন ০৯ মার্চ ২০১৫
খেলাধুলা ডেস্ক:
আ…উ…ট…! ইংলিশদের শেষ উইকেটটা পড়তে না পড়তেই এক সঙ্গে গর্জে উঠল সারা বাংলাদেশ। তারপর মাঠের ক্রিকেট থেমে গেলেও উল্লাস আর উচ্ছ্বল আনন্দের বাধাহীন উৎসবে মাতোয়ারা সারা বাংলাদেশ। প্রজাপতি নাচনে বাংলার পথে পথে জেগেছে উল্লাসের মিছিল। আজ হাই ফাইভে চেনা অচেনার ব্যবধান নেই, রাজনৈতিক মত-পথের পার্থক্য খুলে আজ সবাই গর্ব ভরে গলা ছেড়ে গাইছে গান। স্বপ্নপূরণের আনন্দ তো এমনই। ব্রিটিশদের হাতে বাড়ি ফেরার টিকেট ধরিয়ে দিয়ে আজ যে আমরা পৌঁছে গেছি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে!
অ্যাডিলেড ওভালে আজ সোমবার অনুষ্ঠিত ক্রিকেট ম্যাচটি সারক্ষণই দুলেছে পেণ্ডুলামের মতো। এই ইংল্যান্ড এগিয়ে তো আবার এগিয়ে বাংলাদেশ। সারাক্ষণই টান টান উত্তেজনার ম্যাচটির শেষ অঙ্কে দুরন্ত দুর্বার ক্রিকেটের প্রদর্শনী দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি টাইগারদেরই মুখে। আর এই জয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি খেলার আগেই স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। ইংলিশদের ১৫ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বাহিনী। আর মুখ গোমড়া করে ব্যাগ গোছাতে শুরু করেছে ইংলিশরা। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গে জয়ী হলেও তার যে কোনও প্রভাবই পড়বে না পয়েন্ট টেবিলে।
গ্রুপ পর্বের এই ম্যাচটি ছিল ইংল্যান্ডের জন্যে বাঁচা মরার লড়াই। হারলেই চোখ-কান বন্ধ করে টিকিট হাতে বাড়ির পথ ধরতে হবে এয়োইন মরগানদের। আর জিতলেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ। তাই ম্যাচের শুরু থেকেই দুই পক্ষের খেলোয়াড়দের বুক দুরুদুরু, ভীষণ আগ্রাসী হওয়ার ভান করলেও পেশাদারীত্বের খোলসের ভেতরেও ইংলিশরাও কোনঠাসা। আর সেই ভয়েই কিনা ম্যাচের শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দিলেন তামিম আর ইমরুল কায়েস। তবে সব ভয় কাটিয়ে দুর্দান্ত ভাবে খেলায় ফিরে আসেন সৌম্য সরকার আর মাহমুদ উল্লাহ।
গত বিশ্বকাপের ম্যাচটিও হয়েছিল উত্তেজনায়পূর্ণ। সেই ম্যাচটিতেও শেষ দিকে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ায় পেসার শফিউল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এবারের ম্যাচেও ছিলেন ত্রাতার ভূমিকায়। দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া দলটিকে ধীরে ধীরে টেনে তুলেন। মাঝ দিয়ে সৌম্য (৪০) তাকে সেই পথে সঙ্গে দিলেও তাকে মূল সঙ্গটা দেন নিজের ভায়রা ও টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এই পাড়ি দেওয়া পথেই বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে প্রথম শতক পূরণ করেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩৮ বলে করেন ১০৩ রান। রিয়াদ বিদায় নিলেও নিজের চাবুক চালানো অব্যাহত রাখেন মুশফিক। ৭৭ বলে অল্পের জন্যে বিদায় নেন ৮৯ রানে। এই ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার সমান সংখ্যক ৫ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলো বাংলাদেশ।