নিউজ ডেস্ক:: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুলাউড়া আগমনের শত বছরপূর্তি অনুষ্ঠান জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী ‘রবিরাগ’ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। সকালে স্মারক স্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
সকাল ১০ টায় হয় জাতীয় ও উৎসব পতাকা উত্তোলন। পরে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। বেলা ১২টায় প্রথম পর্বের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১টায় চিত্রাংকন, রবীন্দ্র সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাহিত্যের এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বিচরণ নেই। রবীন্দ্রনাথ একজন বিশ্বকবিই নয়, তিনি একজন বিশ্ব সাহিত্যিকও বটে। এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ডে সাহিত্যের ভান্ডারে তাঁর অবদান অতুলনীয়। রবীন্দ্রনাথকে সবসময় নতুনভাবে জানা যায়, নতুনভাবে চিনতে পারা যায়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সকল প্রতিভা যদি আগামী প্রজন্মদের কাছে ফুটিয়ে তোলা যায় তাহলে এই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব হবে। শুধুই রবীন্দ্রনাথের জ্ঞান ভান্ডার কেউ যদি অনুধাবন করতে পারে তবে সে মেধার বিকাশ ঘটাতে পারবে।
সাবেক সচিব আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুপা চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. নেছার আহমদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরীন, জেলা পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ। উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মো. আব্দুল হান্নান।
অনুষ্ঠানে “রবীন্দ্রসাহিত্যে সিলেটের ব্যক্তিঅস্মিতার প্রভাব” এর ওপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক নৃপেন্দ্রলাল দাশ। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন সিলেট মদন মোহন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রণব কান্তি দেব, সিলেট উদীচীর সভাপতি এনায়েত হাসান মানিক। অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্রনাথের ওপর একটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন- কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মতিন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। রাতে স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন ও বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত গবেষক অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাসহ স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ সালের নভেম্বর মাসে ৩ দিনের সিলেট সফরে ভারতের করিমগঞ্জ থেকে ট্রেনযোগে সিলেট এসেছিলেন। পথিমধ্যে সিলেট যাত্রাপথে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ৪ নভেম্বর রাত্রিযাপন করেন।