আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নজিরবিহীন এক খোলা চিঠিতে ইসরাইলের ১০৬ জন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল, মোসাদের পরিচালক ও জাতীয় পুলিশ কমিশনার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে মেনে নেয়ার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ‘দুর্বল নেতৃত্বের’ কারণেই ফিলিস্তিনের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আঞ্চলিক উদ্যোগ বিঘ্নিত হয়েছে।
সাবেক এসব নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে মেনে নিলেও ইসরাইলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১০১ জন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার অথবা মেজর জেনারেল, মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার দুজন সাবেক প্রধান এবং ইসরাইলের জাতীয় পুলিশ বাহিনীর তিনজন সাবেক কমান্ডার।
এর আগে এতো বিপুল সংখ্যক সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা একযোগে এ ধরনের চিঠিতে কখনো স্বাক্ষর করেননি। তাছাড়া তারা মাঝে মাঝে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করলেও রাজনৈতিক ইস্যুতে এভাবে খোলামেলা কথা বলেননি।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী আইডিএএফফের রিজার্ভ কমান্ডার এবং পুলিশ কর্মকর্তারা ইসরাইলি যুদ্ধে অংশ নিয়েছি এবং যুদ্ধের ব্যাপক ও মর্মান্তিক ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কেও আমরা অবহিত।’
‘আমরা এই আশায় দেশের জন্য সাহসের সাথে যুদ্ধ করেছিলাম যে আমাদের সন্তানরা শান্তিতে বসবাস করবে। কিন্তু আমরা কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি। আমাদের সন্তানদেরও এখন রণাঙ্গনে পাঠানো হয়েছে। আমরা দেখছি আমাদের সন্তানরা ইউনিফরম পরে এবং যুদ্ধের হাতকাটা গেঞ্জি পরে অপারেশন প্রটেকটিভ এজে (সর্বশেষ গাজা আগ্রাসনের নাম) অংশ নিচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বারবারই ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই এখন দরকার আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়া।
বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কাছ থেকে ‘সাহসী উদ্যোগ এবং নেতৃত্ব’ আশা করে বলা হয়, দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধানে ইসরাইলের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা অমূলক।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দ্রুতবেগে খাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং নিরাপত্তার কথা বলে লাখ লাখ মানুষকে (ফিলিস্তিনিকে) অধীনস্থ রেখে সমাজকে ক্রমবর্ধমানহারে মেরুকরণ এবং নৈতিক অবক্ষয়ে দিকে নিয়ে যাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহু ইসরাইলের কল্যাণ চান তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি রাজনৈতিক অন্ধমহল ‘তাকে এবং আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে’।
সূত্র: হারেৎজ