প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান, বিশ্বনাথে ছাত্রলীগ নেতার আত্মহত্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৫:২৮,অপরাহ্ন ০২ অক্টোবর ২০১৯
নিউজ ডেস্ক:: বিশ্বনাথে প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে শিপন আলী (৩০) নামের এক ছাত্রলীগ নেতা আত্মহত্যা করেছেন। শিপন আলী উপজেলার দূর্যাকাপন গ্রামের ফজর আলীর ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সোমবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরের টিএনটি রোডে অবস্থিত নিজের বোনের বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। খবর পেয়ে বিশ্বনাথ থানার পুলিশ রাতেই দরজা ভেঙে শিপনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। মঙ্গলবার সকালে তার লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শীতল বৈদ্য শিপন আলীর আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শিপন আলী সোমবার রাতে এক বন্ধুর বাসায় খাবার খেয়ে উপজেলা সদরের টিএনটি রোডস্থ তার বোনের বাসায় চলে যান। বোনের বাসা খালি থাকায় রাতে তিনি সেখানে অবস্থান করেন এবং মোবাইল ফোনে তার প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে এক মেয়ে শিপন আলীর ভাই লিটন আলীকে কল করে জানান যে শিপন আত্মহত্যা করেছেন। সংবাদটি লিটন তার পরিবারের সদস্যদের জানান। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতায় পুলিশ বাসার দরজা ভেঙে শিপনকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দূর্যাকাপন গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শিপন আলী উপজেলা সদরের টিএন্ডটি রোডে অবস্থিত তার আপন বোনের ভাড়া বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন। গত দুইদিন আগে শিপনের বোন ও বোনের পরিবারের সকল সদস্য তাদের শিপনের বাড়িতে বেড়াতে যান। তারা বাসায় না থাকায় শিপন ওই বাসায় থাকতে শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে একটি মেয়ের সঙ্গে শিপনের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল।
সোমবার রাত প্রায় ১১টার দিকে তিনি প্রেমিকার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। কথা বলার পর তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ সময় প্রেমিকা শিপনের ভাই লিটন আলীকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে শিপনের পরিবারের সদস্যরা ওই বাসায় ছুটে যান। বাসায় গিয়ে তারা বাসার সকল দরজা-জানালা বন্ধ পান। এ সময় তারা শিপনকে অনেক ডাকাডাকি করেও তার কোনো সাড়া-শব্দ পাননি। পরে পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে এবং ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে শিপনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
জানা গেছে, শিপনের ভাই লিটন আলী বিদেশে যাওয়ার জন্য গত সোমবার রাতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তিনি ঢাকা থেকে মঙ্গলবার বাড়িতে ছুটে আসেন।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা জানান, মঙ্গলবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।