প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম ঢাকা দক্ষিণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৭:০৩,অপরাহ্ন ১১ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকা। এই এলাকার ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটি অলিগলি এখন প্রার্থী ও তার সমর্থকদের পদচারণায় মুখর। প্রতিটি বাড়ি-প্রতিটি ঘর চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা। নিজের প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় ঘাম ঝরাচ্ছেন ২১ মেয়র প্রার্থীও। আওয়ামী লীগের সাঈদ খোকন ও বিএনপির মির্জা আব্বাসের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন অন্য সাধারণ প্রার্থীরাও।
তরুণ-তরুণী-নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ-বৃদ্ধা প্রতিটি ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নগরীকে বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার। ভোটাররাও প্রার্থীদের কাছে পেয়ে যাচাই করে নিচ্ছেন, তুলে ধরছেন দাবি-দাওয়া।
সাঈদ খোকন ও মির্জা আব্বাসদের মতো হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বড় বড় নেতারা প্রচারণায় নামলেও বসে নেই অন্য সাধারণ প্রার্থীরা। তারাও সদলবলে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে হানা দিচ্ছেন।
শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে রমনা পার্ক থেকে প্রচারণা শুরু করেন মেস সংঘের মহাসচিব আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ। নিজের লাউ প্রতীকের পক্ষে ভোট চেয়ে এই মেয়র প্রার্থী ইতোমধ্যে ৩০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
প্রচার-প্রচারণা শুরুর আগে আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ বলেন, যদি আমি মেয়র নির্বাচিত হতে পারি, তবে পূর্ণ বয়স্ক অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করবো। কেবল তাই নয়, আমি নিজেও বিয়ে করবো। বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সু-সম্পর্ক তৈরি করবো। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি বৃদ্ধাশ্রমের পাশাপাশি লুডু ও দাবা খেলার ব্যবস্থা করবো।
বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচনে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মির্জা আব্বাসকে সমর্থন দেওয়া হলেও এই সিটিতেই মেয়র পদে লড়ছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
কমলা-লেবু প্রতীকের এ প্রার্থী অবশ্য নিজের প্রার্থিতা বা প্রচারণার বিষয়ে কোনো কথা বলছেন না। উপরুন্ত বিএনপির দফতরের দায়িত্ব পেয়ে শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাসের পক্ষে কথা বলেন।
নির্বাচনে সিপিবি-বাসদের সমর্থন নিয়ে টেবিল প্রতীকে মেয়র পদে লড়ছেন বজলুল রশিদ ফিরোজ। শনিবার সেগুনবাগিচা ও পল্টন এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন তিনিও।
প্রচারণা শুরুর আগে রশিদ ফিরোজ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই। সবাই একটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এ কারণে শেষ মুহূর্তে ভোটের পরিবেশ থাকবে কিনা শঙ্কায় আছি।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় নির্বাচনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনএফ) সমর্থন নিয়ে ময়ূর প্রতীকে লড়ছেন শফিউল্লাহ চৌধুরী।
সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনেই ঢাকাবাসীসহ সবার দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেন শফিউল্লাহ।
তিনি বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে যানজট নিরসন ও পরিবেশ দূষণ রোধে ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করবো। নগরীর আবর্জনা সমস্যা সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাধান করে পরিচ্ছন্ন ঢাকা শহর গড়ে তুলবো। ফুটপাত দখলমুক্ত করে হকারদের পুনর্বাসন ও পথচারীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করবো।
নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের অংশ ও একইসঙ্গে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সমর্থন নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন। সোফা প্রতীকধারী এ প্রার্থী শনিবার শাহবাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বঙ্গবাজার এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমি যেখানেই যাচ্ছি সেখানে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমি যদি মেয়র নির্বাচিত হই, তবে তিলোত্তমা নগরী গড়ে তুলবো। নগরী থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি দূর করবো।
দক্ষিণে হাতি প্রতীকে প্রচারণা শুরু করেছেন মেয়র প্রার্থী দিলিপ ভদ্রও। তিনি বলেন, পোস্টার ছাপানো শুরু করেছি। হাইকোর্ট মাজার থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করছি। এরপর কালী মন্দির, সবুজবাগ মন্দিরসহ আমাদের হিন্দু কমিউনিটির মধ্যে প্রচার-প্রচারণা শুরু করবো।
এছাড়া, ভাড়াটিয়াদের সংগঠন ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার মেয়র প্রার্থী হিসেবে শার্ট প্রতীকে শুক্রবার থেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। শনিবারও তোপখানা রোড ও সচিবালয় এলাকায় শার্ট প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
বাহার বলেন, ভোটাররা চুপচাপ রয়েছে। শুধু ভাড়াটিয়ারাই যদি আমাকে ভোট দেন, তবে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো। ভাড়াটিয়াদের সব সমস্যা সমাধান করবো। বাড়িভাড়া আইন অতিদ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন করবো।