নিউজ ডেস্ক:: আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে। ওই পেঁয়াজ এলে স্বাভাবিক হবে বাজার। এমনটি জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রোববার রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ভবনে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিল্প, কৃষি, বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, শিল্প ও কৃষি সচিব, সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধান এবং ব্যবসায়ীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কিছুটা কমার পর গতকাল শনিবার থেকে আবারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। শেষ দুদিনে রাজধানীতে য়াজের দাম কেজিতে বাড়ে ৪০ টাকা।
এর আগে হু হু করে বেড়ে পেঁয়াজের দাম পৌঁছায় ২৫০ টাকায়। এরপর গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কমে ২০০ টাকার নিচে আসে। অস্বাভাবিক বাড়ার পর ধারাবাহিকভাবে কমে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১৮০ এবং নিম্ন মানের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
কিন্তু শুক্রবার থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ে ২০ টাকা। শনিবারও কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ে ২০ টাকা। এতে ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ২২০ এবং নিম্ন মানের পেঁয়াজের কেজি ১৭০ টাকায় পৌঁছায়।
পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাহাজে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে। এ পেঁয়াজ চট্টগ্রাম পর্যন্ত আমদানি খরচ কেজিপ্রতি ৩২ টাকা পড়বে। কিন্তু খুচরা বাজারে এটি সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সবমিলিয়ে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের ২৪ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ লাগে। এর মধ্যে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। যার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই আসে ভারত থেকে। কিন্তু ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় আমাদের দেশের বাজারে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পেঁয়াজের সংকট মোকাবিলায় বড় বড় ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ আমদানি করতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। তারা আমাদের কথা মতো মিশর-তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি কার্যক্রম শুরু করে।
‘কিন্তু আমদানি করা পেঁয়াজ আসতে এক মাস সময় লাগবে, প্রথম অবস্থায় আমরা তা বুঝতে পারিনি। তাই তাৎক্ষণিক সংকট মেটাতে উড়োজাহাজে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।’ বিমানে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য অনেক বেশি পড়বে। কিন্তু ভোক্তাপর্যায়ে আমরা এ পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করব- জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে
‘চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে’ জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়েনি। কেজিতে দু-এক টাকা দাম বেড়েছে খুচরা বাজারে। তবে মোটা চালের নয় সরু চালের দাম বেড়েছে। কারণ এখন আমাদের লোকজন সরু চাল বেশি খায়।
খাদ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বছরব্যাপী চাহিদা, বাংলাদেশে পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, মজুত ব্যবস্থা, সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে তা মোকাবিলা করা হবে- এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।