পুতিন জীবিত নাকি মৃত!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪৮:৪৪,অপরাহ্ন ১৫ মার্চ ২০১৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক::
মার্কিন নেতৃত্বাধীন একমুখী বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে পাল্টা ক্ষমতা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন যিনি; সেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংবাদমাধ্যমে নেই এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে। বিগত কয়েকবছরে কখনও এতোটা সময় মিডিয়ার বাইরে থাকেননি এই প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী মানুষটি। তাই রাশিয়া জুড়ে এখন পুতিনের মৃত্যুর গুজব। তবে যদি মরেই গিয়ে থাকেন পুতিন; কেন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না? বিজনেস ইনসাইডারের বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সেই কারণগুলো।
গেলো ৫ই মার্চ ইতালির প্রেসিডেন্ট মাত্তিও রেনজির সাথে বৈঠক করেন পুতিন। এর পরপরই তার কাজাখাস্তান সফর বাতিল সন্দেহের সৃষ্টি করে। কাজাখাস্তান-এর তরফ থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানানো হয়, অসুস্থতার কারণে পুতিন সফর বাতিল করেছেন। তবে অসুস্থতার খবর স্বীকার করেনি পুতিনের মুখপাত্র। সেসময় তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ‘পুতিন অনেকগুলো বৈঠক করবেন আজ-কালের মধ্যে, তবে তারমধ্যে কোনগুলো গণমাধ্যমে আনা হবে, সেটা এখনও ঠিক করা হয়নি।’
সেই সাথে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা রাশিয়া’স ডমেস্টিক ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের (এফএসবি) বাৎসরিক বৈঠকেও পুতিনের অনুপস্থিতি সন্দেহ আরো ঘনীভূত করে। গুজব আরো শক্ত ভিত্তি পায় যখন প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইটে রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্যারেলিয়ার গভর্নরের সাথে পুতিনের বৈঠকের ছবি প্রকাশ করে ক্রেমলিন। ছবিটি প্রকাশ করা হয় ১১ মার্চ, অথচ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪ মার্চ। পাশাপাশি ৫ কিংবা ৬ই মার্চ একটি নারী সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধির সাথে পুতিনের বৈঠকের ছবি প্রকাশ করা হয় ৮ মার্চ। এতে আরো সন্দেহের সৃষ্টি হয় রাশিয়াজুড়ে। তবে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র দিমিত্রি এস. পেসকফ সকল গুজব উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভালো আছেন।
কিন্ত এরপরও গুজব ছড়াচ্ছে ভাইরাসের মতো। পুতিন কি তবে মরে গেছেন? জীবন্ত অবস্থায় যে মানুষের প্রবল উপস্থিতি মিডিয়ায়; সেই মানুষটি মরে গেলে কেন তা আড়াল করা হবে? বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছে বিজনেস ইনসাইডার। বিজনেস ইনসাইডার বলছে, আদতে একক ব্যক্তিনির্ভর রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণেই এমনটা ঘটেছে। পুতিনের বিকল্প কে? এই প্রশ্নের উত্তর ছাড়া মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করলে পরাশক্তির লড়াইয়ে রাশিয়ার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে- এই কারণেই পুতিনের মৃত্যুর সংবাদ আড়াল করছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-মহাবিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক টমাস নিকোল তাই বলছেন, পুতিন মরে গেছেন কিনা জানি না, তবে এটা ঠিক ক্রেমলিন দেয়ালের আশপাশজুড়ে কিছু একটা ঘটেছে।
রাশিয়ার ব্লগজগতেও তাই তুমুল উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠা চলছে পুতিনকে ঘিরে। ফরেন পলিসির একজন ইউরেশিয়া বিশেষজ্ঞ হান্না থবার্ন বিজনেস ইনসাইডারের কাছে মন্তব্য করেন, এধরনের গুজব তখনই ছড়ায় যখন এক ব্যক্তিনির্ভর সরকারব্যবস্থা কায়েম করা হয়। তিনি এও বলেন যে, মৃত্যুর এই গুজব এবারই প্রথম নয়। হান্না থবার্ন মনে করেন, যদি পুতিন মরেও গিয়ে থাকে, তারপরও তার একজন বিকল্প নেতা নির্ধারণ করার আগ পর্যন্ত ক্রেমলিন তা লুকিয়ে রাখবে।