নতুন বেতন কাঠামোতে আর্থিক সুবিধা বঞ্চিত হবে ৬৫ শতাংশ কর্মচারী
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০০:০৯,অপরাহ্ন ২০ মে ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
নতুন জাতীয় বেতন কমিশন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলে ৬৫ শতাংশ কর্মচারী আর্থিক সুবিধাবঞ্চিত হবে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতিসহ ছয়টি সংগঠন। বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবুল হাশেম।
লিখিত আবেদনে তারা বলেন, নতুন জাতীয় বেতন কাঠামোতে বৈষম্য এবং সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল রদ করার প্রস্তাবনায় প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি এ প্রস্তাবনা অনুমোদন হলে ৬৫ শতাংশ কর্মচারী আর্থিক সুবিধাবঞ্চিত হবেন। তাই নতুন কাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল সংযুক্ত করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন নিম্ন আয়ের সরকারি কর্মচারীরা।
প্রশাসনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন স্তরে বেতনবৈষম্য দূর করা, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখার দাবি পূরণে আলটিমেটাম দেয়ার পর তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি লিখিত আবেদনে জানান, প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর কাছে এসব কর্মচারীর বক্তব্য নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের মৌলিক চাহিদা মেটানো এবং বৈষম্য দূর করতে সর্বনিম্ন বেতন অন্তত ১২ হাজার টাকা করতে হবে।
সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কার। কারণ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদোন্নতি নেই বললেই চলে। টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দিলে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীরা যে গ্রেডে চাকরিতে প্রবেশ করবে সেই গ্রেডই চাকরি জীবনের সমাপ্তি ঘটবে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ৮২০ টাকা মূল বেতনে শেষ জীবনের বেতন স্কেল দাঁড়াবে ৪৭০০ টাকা। আর সিলেকশন গ্রেড এবং টাইমস্কেল থাকলে বেতন স্কেল বেশি হবে। বঞ্চিত হবেন নিম্ন আয়ের সরকারি কর্মচারীরা।
নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার শেষ সময়ে যারা টাইমস্কেল পেয়েছেন স্বল্পসংখ্যক এই কর্মচারী ছাড়া বেশিরভাগ কর্মচারীই সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক নোমানুজ্জামান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান রহমান ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম পে-স্কেল ১০টি গ্রেডে ঘোষণা করেছিলেন। তখন যদি বঙ্গবন্ধু বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ নিতে পারেন, তাহলে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন বৈষম্য দূর করতে ২০টির পরিবর্তে ১০টি গ্রেড নির্ধারণ করতে পারবেন না। তাই কমপক্ষে ১৬টি গ্রেডে বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবি জানান তারা।
তারা দাবিতে উল্লেখ করেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ক্ষেত্রে উচ্চতর পদে পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতায় যোগ্য ও মেধাবিদের পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক নোমানুজ্জামান আল আজাদ বলেন, আমাদের দাবি আদায়ে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ জুনের মধ্যে ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে বাজেট অধিবেশনের সময় লাগাতার কর্মসূচি চলবে।
১৬ মে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত নতুন বেতন কাঠামোতে সর্বনিম্ন স্তরে বেতনবৈষম্য দূর করা, টাইমস্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখার দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মহাসচিব নোমানুজ্জামান আজাদ।