দুদক পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে জনগণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৮:২৫,অপরাহ্ন ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক বলেছেন, দিন দিন দুদক এবং পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন জনগণ । দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের উচিত জনগণকে দৃশ্যমান অ্যাকশন দেখানো।
মঙ্গলবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মাকসুদুল হাসান খানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, মানুষ পুলিশের কাছে যেতে যেমন ভয় পায়, তেমনি দুদকে আসতেও ভয় পাচ্ছেন। ফলে জনগণ দুদকের কার্যক্রমের স্বচ্চতা দেখতে চায়। আর এ স্বচ্ছতার স্বার্থে দুদকের কার্যক্রম ওয়েভ সাইটে দেয়া উচিত। মানুষের সঙ্গে আচরণে দুদককে তার যথাযথ মর্যাদা বজায় রাখতে হবে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেন,দুর্নীতি মুক্ত ও আলোকিত দেশ গড়তে হলে, আগে নিজেদের দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে। দুর্নীতিবাজরা কখনো দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে পারবে না।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন,দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানকে পরামর্শ দিয়েছিলেন আদালতে কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন ব্রাঞ্চ অফিসারকে ধরার জন্য। কিন্তু ভয়ে এ বিষয়ে তিনি অগ্রসর হননি ।
তিনি বলেন, দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা এবং আদালতে পিপিদের গাফিলতির কারণে অধিকাংশ মামলা খারিজ হয়ে যাচ্ছে। কেননা দুদকের মামলা দায়ের ও আদালতে চার্জশিট দাখিলে নানা অসঙ্গতি এবং দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে ন্যয় বিচার পাচ্ছেনা ভিকটিমরা। এমনকি দীর্ঘসূতিার ফলে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যি আদালতে উপস্থিত হতে পরছেন না।
এবিএম খায়রুল হক বলেন, ডাকাতির ঘটনার পরেও মানুষ পুলিশের কাছে যেতে চায় না। কারণ ডাকাত যা নেবার তো নিয়েছে, এখন আবার পুলিশকে দিতে হবে এবং নতুন করে নানা হয়রানীর শিকার হবার ভয়ে পুলিশকে এরিয়ে যেতে চায়। একই ভাবে বড় বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আসার পরও যখন তারা ছাড়া পেয়ে যায় এবং জনগণ ন্যয় বিচার দেখতে পায় না। তখন জনগণ স্বাভাবিক কারণেই দুদকের প্রতি আর আস্থা রাখতে পারেন না।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি খুঁজতে যাবেন না। সরকারের সিদ্ধান্তে কিছু ভুল থাকতে পারে এর মানে দুর্নীতি নয়। এভাবে সরকারি কর্মকর্তাদেরকে আতঙ্কে রাখলে দেশে উন্নয়নমূলক কাজ হবে না।
এবিএম খায়রুল হক বলেন, আমাদের রাজনীতিতে লিডারদের কোনো জবাব দিহিতা করতে হয় না।
দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, টিআইবি কোনো বিশেষ গোষ্ঠির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এরা ঘরের শক্র বিভিষণ।
তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, দুদককে যে’দায়মুক্তি কমিশন বলে আখ্যায়িত করেছেন তার প্রমাণ আপনাকে দিতে হবে। তিনি খালেদা জিয়াকে আয়নায় নিজের চেহারা দেখার পরামর্শ দেন। কারণ আপনার আমলেই বিশ্বে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চাম্পিয়ান হয়েছিল।
আজ সকালে দুদক কার্যালয়ের সামন থেকে একটি র্যা লী বের হয়ে কাকরাইল, নয়াপল্টন মোড়, বিজয়নগর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে এক মানববন্ধ কর্মসূচি পালন করেন। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- রুখবো দুর্নীতি সোনার বাংলাদেশ।