দুই মোড়লের ফাইনালে ওঠার লড়াই
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫৭:২৯,অপরাহ্ন ২৫ মার্চ ২০১৫
স্পোর্টস ডেস্ক :: ‘পাওয়ারহাউজ’ কথাটি ক্রিকেটের চেয়ে ফুটবলেই চল বেশি। আর শব্দটি ব্যবহার হয় জার্মান ফুটবলের শক্তি বোঝানোর বেলায়। বর্তমান ক্রিকেটের ‘পাওয়ারহাউজ’ কে? একসময় বিষয়টা এককভাবে অস্ট্রেলিয়ার দখলেই ছিল। এখন তাতে ভাগ বসিয়েছে ভারত।
বহুল আলোচিত-সমালোচিত তিন মোড়লের দু’দল অস্ট্রেলিয়া-ভারত। ব্যাপারটিকে এভাবেও বলা যায়, বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি দুই মোড়ল! সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) অস্ট্রেলিয়া-ভারতের দ্বিতীয় সেমিফাইনালটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায়। ইতিমধ্যে ২৯ মার্চের ফাইনালে নিজেদের প্রথমবার নাম লিখিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া-ভারত মিলে ফাইনাল খেলেছেন সর্বমোট নয়বার। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়া চারবার, ভারত দু’বার চ্যাম্পিয়ন। এখন বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন- ২৯ মার্চ নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ হচ্ছে কে? ভারত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। ঘরের মাঠে ২৮ বছর পর মহেন্দ্র সিং ধোনীর দল শিরোপা জেতে ২০১১ বিশ্বকাপে। এবারও তার কাঁধেই রয়েছে ‘টিম ইন্ডিয়া’র ভার। দলকে পরিচালনা করছেন সামনে থেকে। সেমিফাইনালে উঠে আসা পর্যন্ত ধোনির দল একটি ম্যাচেও হারেনি।
এ বিশ্বকাপে দুই স্বাগতিকের একটি অস্ট্রেলিয়া। আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়েও তারা সবার উপরে। গ্রুপপর্বে নিউজিল্যান্ডের কাছে হোঁচট খাওয়া বাদ দিলে ফেভারিটের মতোই সেমিফাইনালে এসেছে অস্ট্রেলিয়া।
মাইকেল ক্লার্কের দলকে এগিয়ে রাখছে ভারতের বিপক্ষে সাম্প্রতিক ফর্ম। বিশ্বকাপ শুরুর আগে চার টেস্টের সিরিজ জয়ের পাশাপাশি ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি ভারত।
এটা যেমন অস্ট্রেলিয়ার প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, একইভাবে বিশ্বকাপে দলকে বদলে ফেলেছেন ধোনিও। সাত ম্যাচের সাতটিতেই জয় নিয়ে তারা উঠে এসেছে সেমিতে। লম্বা ব্যাটিং-লাইন আপের সবাই আছে ফর্মের চূড়ায়।
শিখর ধাওয়ান সেঞ্চুরি করেছেন দুটি। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং সুরেশ রায়না করেছেন একটি করে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ভারতীয় ফাস্ট বোলাররা কতটুকু সফল হবে এ নিয়ে শঙ্কা ছিলই। কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব, মোহিত শর্মারা।
তবে হ্যাঁ, সিডনিতে তাদের ভুগতে হতে পারে। এখানে স্পিনারদের মূখ্য হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এই মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলংকার কোয়ার্টার ফাইনালে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন প্রোটিয়া স্পিনার ইমরান তাহির এবং জেপি ডুমিনি।
তুলনামুলক বিচার করলে একটু পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। একটি করে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং অ্যারন ফিঞ্চ। আর এসজিতিতে অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য ঈর্ষণীয়। এখানে ১৩টি ওয়ানডে খেলে অসিরা হেরেছে মাত্র একটিতে। সেটাও সাত বছর আগে।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্যাট কামিন্স না জশ হ্যাজলউড এ নিয়ে একাদশ সাজাতে দ্বীধায় ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হ্যাজলউড ৪ উইকেট তুলে নিয়ে এ সমস্যার ইতি টেনেছেন। তাই অস্ট্রেলিয়ার অপরিবর্তিত একাদশ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ভারতীয় দলেও কোন পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পরিসংখ্যান বলছে,বিশ্বকাপে সর্বশেষ দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল ২০১১ সালে আহমেদাবাদে। যেখানে ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয় অস্ট্রেলিয়া। এরআগে একবারই যৌথ আয়োজক হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯২ সালে। ওই বিশ্বকাপে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে ভারতকে ১ রানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
একই সঙ্গে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৩ ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। যার মধ্যে হেরেছিল মাত্র ১টিতে। তাও সাত বছর আগের কথা। শুধু তাই নয়, এই মাঠে গত তিন বছরে কোন ম্যাচ হারেনি অস্ট্রেলিয়া।
তবে, অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ড যেভাবে জিতেছে এবং ম্যাচটির পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছিল, তাতে করে কেউ আর নিরাপদ নয়।
ভারত (সম্ভাব্য): শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, আজিঙ্কা রাহানে, মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), সুরেশ রায়না, রবিন্দ্র জাদেজা, মোহিত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব এবং রবিচন্দ্র অশ্বিণ।
অস্ট্রেলিয়া (সম্ভাব্য): অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, মাইকেল ক্লার্ক (অধিনায়ক), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, শেন ওয়াটসন, ব্রাড হাডিন, জেমস ফকনার, মিচেল জনসন, মিচেল স্টার্ক এবং জশ হ্যাজেলউড।