‘তিস্তা চুক্তির সুনির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়া সম্ভব নয়’
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩১:০৩,অপরাহ্ন ০৮ জুন ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন করতে কতদিন লাগবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে মিঃ ইমাম বলেন ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু নিষ্পত্তি করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। তবে এ অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা থাকা উচিত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এ সফরে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হয়েছে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সংলাপের এ অনুষ্ঠানে বিতর্ক হয়। একই পর্বে আলোচনা হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং কৃষি ও শিক্ষা খাতে কম বাজেট বরাদ্দ নিয়েও।
নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলেও সেখানে তিস্তার পানি বণ্টন যে থাকছে না সেটি আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল।
কবে নাগাদ এই চুক্তি হবে সে বিষয়ে ভারতের দিক থেকে এখন সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। শুধু রয়েছে আশ্বাস যেটি গত পাঁচ বছর ধরেই ভারত বাংলাদেশকে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন মমতা ব্যানার্জি ঢাকায় আসতে চাচ্ছিলেন না। নরেন্দ্র মোদীর সাথে মমতা ব্যানার্জির ঢাকা সফরের ফলে তিস্তা চুক্তি নিয়ে মূল বাধা অপসারিত হয়েছে। এখন বিষয়টি সময়ের ব্যাপার বলেও উল্লেখ করেন মিঃ ইমাম।
তবে একই সাথে তিনি বলেন তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট টাইমফ্রেম (সময়সীমা) দেয়া যাবে না। বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী নরেন্দ্র মোদীর এ সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
তবে তিস্তা চুক্তি কবে নাগাদ হতে পারে সে বিষয়ে একটি সময়সীমা থাকা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের পণ্য, সরঞ্জাম বা যাত্রী পরিবহণে তাঁদের কোন আপত্তি নেই।
মিঃ চৌধুরী বলেন, তাঁরা শুধু দেখতে চান এতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হচ্ছে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন এত কিছুর পরও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি কবে হবে সে বিষয়ে সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত।
অনুষ্ঠানের আরেকজন প্যানেলিস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক আমেনা মহসিন মনে করেন, ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলার স্বার্থেই ভারতের উচিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি অতি দ্রুত সম্পাদন করা।
তিনি বলেন, “আপনি যখন বড় শক্তি হতে চান, তখন স্বচ্ছ ইমেজ নিয়ে আগাতে হবে। প্রতিবেশীকে বঞ্চিত করে সেই স্বচ্ছ ইমেজ গড়ে তুলতে পারবেন না।”
নরেন্দ্র মোদীর এ সফরে যে চুক্তিগুলো হয়েছে তার মধ্যে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ভারতের সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। ভারত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুবিধা পাবে।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন ভারতকে সুবিধা দেবার বিনিময়ে বাংলাদেশ আর্থিকভাবে কতটা লাভবান হচ্ছে তার উপরে নির্ভর করছে চুক্তির সফলতা।
ডঃ রহমান বলেন, “কোন ধরণের সার্ভিস চার্জ আমরা নেব, কোন ধরণের সারচার্জ আমরা আরোপ করবো, এই জিনিসগুলো যদি আমরা স্মার্টলি করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের জন্য এটা উপকারী হতে পারে।”
ডঃ রহমান আরও বলেন ভারতকে যোগাযোগ সুবিধা দেবার মাধ্যমে যদি বাংলাদেশ আর্থিকভাবে লাভবান হয় তাহলে দুই দেশের জন্যই বিষয়টি লাভজনক হতে পারে।