ঢাবি : হাড় কাপানো শীতেও গ্রন্থাগারে প্রবেশে দীর্ঘ লাইন
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৫১:০৫,অপরাহ্ন ১১ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ভিতরে প্রবেশের জন্য ভোর ৬টা থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রবেশের একমাত্র গেটটি ছোট হওয়ায় লাইন ধরে ভেতরে প্রবেশে বেশ সময় লাগে। গ্রন্থাগার নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহের রবি থেকে বুধবার সকাল ৮টা ও শনিবার সকাল ১০টায় গ্রন্থাগার খোলা হয়। প্রতিটি সকালে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন, কোন কোন সময় এ লাইন ডাকসু ভবন অতিক্রম করে কলা ভবনের ৩ নং গেট পর্যন্তও দীর্ঘলাইন হয়। হাড়ঁকাপনো শীতেও তার ব্যতিক্রম হয় না। তবে তীব্র শীতে মাঝে মাঝে মানুষের লাইনের পরির্বতে ব্যাগের লাইন দেখা যায়।
এত সংগ্রাম করে আসন পাওয়ার পরও থাকতে হয় দুঃশ্চিন্তায়। আসন-সংকট থাকায় ভেতরে ঢুকে শুরু হয় দখল প্রতিযোগিতা। কার আগে কে চেয়ার দখল করবে তা নিয়ে রীতিমতো চলে যুদ্ধ। চেয়ারে বসা নিয়ে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ে বাকবিতন্ডায়। অনেক সাধনায় সিট পেয়েও স্বস্তি নেই। বাথরুমে যাওয়া বা টুকিটাকি কোনো কাজে উঠলে ফিরে এসে চেয়ার পাওয়া যায় না। কেননা সিট না পেয়ে অনেকেই চেয়ার খালি হওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। কেউ বাইরে যাওয়ামাত্রই চেয়ার নিয়ে বসে যায়।
তবে গ্রন্থাগারে সবাই যে পড়তে আসেন তা নয়। কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে গল্পগুজবে মেতে ওঠেন। আবার কেউ প্রাইভেট পড়ানোর কাজটিও সেরে নেন এ গ্রন্থাগারে।
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা কলেজের গ্রন্থাগার থেকে পাওয়া ১৭ হাজার বই নিয়ে এ গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু। শুরুতে সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৬৬০ আসনবিশিষ্ট গ্রন্থাগারটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি। প্রতি বছর এ সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু গ্রন্থাগারের আসন সংখ্যা রয়ে গেছে আগের মতোই।
এ ব্যাপারে লাইনে থাকা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, হলে পড়ার সুযোগ কম থাকায় লাইব্রেরিতে পড়তে আসি। কিন্তু লাইব্রেরীতে সিট পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো।
এ সম্পর্কে দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খাইরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরীর আসন বৃদ্ধি করলে প্রবেশের জন্য তীব্র শীতে আমাদের কষ্ট করতে হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী রয়েছে সে তুলনায় আসলে লাইব্রেরীতে আসন দেয়া সম্ভব নয়। বাজেট না থাকায় নতুন করে লাইব্রেরীও স্থাপন করা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, লাইব্রেরী মূলত লাইব্রেরীতে যেসব বই আছে সেগুলো অধ্যায়নের জায়গা। বিসিএস কিংবা অন্য কোন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য লাইব্রেরী নয়। আসন সমস্যার সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু গ্রন্থাগারের আর আসন বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই আমরা চেষ্টা করছি ইন্টারনেট লাইব্রেরী চালু করার। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই লাইব্রেরীর বই গুলো পড়তে পারবে।