ছিটমহল বিনিময় : কে হবে লাভবান?
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪১:১৭,অপরাহ্ন ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪
নিউজ ডেস্ক::
ছিটমহল বিনিময় নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছিল সাধারণ জনগণের মধ্যে। বাংলাদেশ-ভারতের ছিটমহল বিনিময়ের দ্বার খোলার প্রান্ত যতই ঘনিয়ে আসছে এ বিভ্রান্তি যেন আরও বেড়েই চলেছে সেই সাথে যুক্ত হয়েছে লাভ লোকসানের হিসাব।
এতে বাংলাদেশ লাভবান হবে, নাকি ভারত লাভবান হবে? তা নিয়েই অংক চলছে যুগের পর যুগ ধরে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্ত ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সম্মতির পর আবারও আসামসহ ভারতের আরও বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়েছে।
অনেকে মনে করছেন ভূমির পরিমাণ বিবেচনা করলে ভারতই লাভবান হবে। কিন্তু ভারতের বিরোধিতার কারণ অন্য। স্থলসীমা নির্ধারণ হলে স্থলবন্দরগুলো এখন তারা যেভাবে ব্যবহার করছে সেভাবে পারবে না। আরো একটি কারণ হলো ভারতের ছিটমহলগুলোতে লোকসংখ্যা বেশি এবং তাদের অনেকেই আর বাংলাদেশের নাগরিক নেই। ফলে ভারতকে বাড়তি লোকসংখ্যার চাপ নিতে হবে কিছুটা।
কুটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছিটমহলগুলোকে সীমান্তবর্তী এলাকার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই ভারতের সব নাগরিক নয়, একশ্রেণির মানুষেরা এর বিরোধিতা করছে, তাদের স্বার্থ- সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ক্ষতির কথা চিন্তা করে। বাংলাদেশর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকারকে ছিটমহল বিনিময় বিষয়টি নিস্পত্তি করার দাবি, অনুরোধ জানানো হয়ে আসছিল। গত ৬ দশকে ভারতের সরকারগুলো বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটি আলোর মুখ দেখেনি।
১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় রেডক্লিফের মানচিত্র বিভাজন থেকেই ছিটমহলের উদ্ভব। এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল আছে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতে। এসব ছিটমহলে বসবাসকারী জনসংখ্যা সংখ্যা ৫১ হাজার। ২০১১ সালের গণনা অনুযায়ী ভারতের ছিটমহলের লোকসংখ্যা ৩৭ হাজার এবং বাংলাদেশের ১৪ হাজার। ২৪ হাজার ২৬৮ একর ভূমি নিয়ে দুই দেশের ছিটমহল। তার মধ্যে ভারতের ১৭ হাজার ১৫৮ একর। বাংলাদেশের ছিটমহলের জমির পরিমাণ ৭ হাজার ১১০ একর। ভারতীয় ছিটমহলগুলোর অধিকাংশই রয়েছে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। এসবের মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯, পঞ্চগড়ে ৩৬, কুড়িগ্রামে ১২ ও নীলফামারিতে ৪টি ভারতীয় ছিটমহল রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এর মধ্যে ৪৭টি কুচবিহার ও ৪টি জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত।