ঘোষণা ছাড়াই সিলেট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৭:২৬,অপরাহ্ন ০৫ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: সিলেটের এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের ঘোষণা করা হয় ১৯৯৮ সালে। অথচ প্রথম ফ্লাইট অবতরণে সময় লেগে যায় দীর্ঘ ১৭ বছর। প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট হিসেবে ১ এপ্রিল বিমানবন্দরটিতে অবতরণ ও উড্ডয়ন করে ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। এর পর নিয়মিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাতায়াতের কথা ছিল। কিন্তু একদিনের মাথায়ই তা বন্ধ হয়ে গেল।
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত সেবা চালুর পরদিনই তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিলেটের বাসিন্দারা। ঘোষণা ছাড়াই সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণও জানাতে পারেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ফ্লাই দুবাইয়ের সিলেট অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্র ও শনিবার ফ্লাই দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট দুবাই থেকে যাত্রী নিয়ে সরাসরি ওসমানী বিমানবন্দরে আসার কথা ছিল। আবার ঐদিনই সিলেটের যাত্রী নিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা, কিন্তু ফ্লাইট দুটি ওসমানীতে না এসে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। শুক্রবার এয়ারলাইনসটির সিলেটের যাত্রীদের রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ও শনিবার এনা পরিবহনের বাসে ঢাকায় নেয়া হয়। ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর জন্মস্থান সিলেট। ওসমানী থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পাওয়া এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি। তবে রিফুয়েলিং স্টেশন না থাকায় তা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ওসমানীর রানওয়েতে অবতরণ করত না কোনো বিদেশী উড়োজাহাজ। সম্প্রতি রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যাতায়াতে সব বাধা দূর হয়। ১ এপ্রিল বিকালে ফ্লাই দুবাইয়ের ৮০০ সিরিজের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি ১৬৩ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করে ওসমানীতে। ওই উড়োজাহাজের ক্রুরা ওসমানী বিমানবন্দরের অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুবিধার প্রশংসা করেন। তার পর আর কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণ করেনি। যদিও বৃহস্পতিবার ও রোববার ছাড়া সপ্তাহে পাঁচদিন ফ্লাই দুবাইয়ের উড়োজাহাজ ওসমানীতে অবতরণের কথা ছিল। ফ্লাই দুবাইয়ের ওয়েবসাইট থেকেও সরিয়ে নেয়া হয়েছে ওসমানীতে ফ্লাইটের সময়সূচি।
এ বিষয়ে ফ্লাই দুবাইয়ের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার ওসমানীতে যে ফ্লাইট অবতরণ করার কথা ছিল, সেটি শাহজালালে অবতরণ করে। এর পর ঢাকা থেকে যাত্রীদের রিজেন্ট এয়ারওয়েজে করে সিলেটে পৌঁছে দেয়া হয়। শনিবারের ফ্লাইটও শাহজালালে নেমেছে। এ ফ্লাইটে উঠতে সিলেটের ১৬৪ জন যাত্রীকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে এনা পরিবহনের বাসে। ১, ৩ ও ৪ এপ্রিল— তিনদিনই সিলেটের যাত্রীতেই পূর্ণ ছিল ফ্লাই দুবাইয়ের এ ফ্লাইট।
কোনো কারণ ছাড়া হঠাত্ করেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়াকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন সিলেটের বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করেন, ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কায় বিমান বাংলাদেশ ওসমানীতে ফ্লাই দুবাইয়ের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়ায় সিলেটের প্রবাসীদের আগের মতো দুর্ভোগে পড়তে হবে বলে মনে করছেন তারা। গতকাল এনা পরিবহনের বাসে ঢাকায় যাওয়া ফ্লাই দুবাইয়ের যাত্রী শামীম আহমদ বলেন, ‘ফ্লাইটের টিকিট কিনে এখন আমাদের বাসে যেতে হচ্ছে। এর চেয়ে দুর্ভোগের আর কী হতে পারে।’
ফ্লাই দুবাইয়ের সিলেট স্টেশন ম্যানেজার মাসুম মিয়া বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার ওসমানীতে দুটি ফ্লাইট অবতরণ করার কথা থাকলেও তা ঢাকায় শাহজালালে অবতরণ করেছে। কেন ওসমানীতে অবতরণ করছে না, এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।’
এ ব্যাপারে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘ফ্লাইট বন্ধের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। এটা সম্পূর্ণ ফ্লাই দুবাইয়ের নিজস্ব ব্যাপার।’