কামারুজ্জামানের কথা রাখল না জামায়াত
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১১:০৫,অপরাহ্ন ০৭ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের কথা রাখল না তার দল জামায়াতে ইসলামী। ২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৭ নম্বর সেল বকুল থেকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি জামায়াতকে পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই পরামর্শ সম্বলিত চিঠি যখন প্রকাশ্যে আসে, তখন তিনি দলীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রোষানলে পড়েছিলেন। যদিও জামায়াতের একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম চিঠির প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করে সামনে এগোতে চেয়েছিল।
‘পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল গ্রহণ সময়ে দাবি’ শিরোনামে লেখা ওই চিঠিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান তার দলের বিগত ৬০ বছরের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের বিশ্লেষণ করে দলের জন্য বেশকিছু নতুন কৌশল ও কর্মপন্থা প্রস্তাব করেন। প্রায় ছয় হাজার শব্দের এই চিঠিতে কামারুজ্জামান ওই সময়ের পরিস্থিতিকে ‘খুব নাজুক’ এবং জামায়াতের জন্য ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে উল্লেখ করে তা মোকাবেলায় তিনটি বিকল্প পথ দিয়েছিলেন। বিকল্পগুলো নিম্নরূপ:
০১. যা হবার হবে। আমরা যেমন আছি তেমনই থাকব। (বর্তমানে এই কৌশলই অবলম্বন করা হয়েছে।)
০২. পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত সিদ্ধান্ত নিয়ে পেছনে থেকে একটি নতুন সংগঠন গড়ে তুলবে। এই সংগঠন প্রজ্ঞা ও দৃঢ়তার সঙ্গে ধর্মহীন শক্তির মোকাবেলা করবে।
০৩. আমাদের যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে, তারা জামায়াতের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবো এবং সম্পূর্ণ নতুন লোকদের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দেব। অর্থাৎ একটা নিউ জেনারেশন জামায়াত হবে এটি।
চিঠিতে মৃত্যুদণ্ডের আশঙ্কা করেছিলেন কামারুজ্জামান। বলেছিলেন, ‘সরকারের আরও তিন বছর সময় আছে। এই সময়ের মধ্যেই যেকোনওভাবে প্রহসনের বিচার করে জামায়াতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে পারে। জামায়াতের কর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঘাবড়ে দেওয়ার জন্য মৃত্যুদণ্ডও দিতে পারে এবং অনেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারে। আবার সম্ভাবনাময় জামায়াত নেতাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে।’
একাত্তরের এ আলবদর নেতা আরও লিখেছেন, সরকার বিচারপ্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে তাদের ভাবমূর্তি খতম করে নির্বাচনি রাজনীতিতে জামায়াতকে একটি অকার্যকর দলে পরিণত করতে পারে। একটা পর্যায়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের কথা বলে এবং বঙ্গবন্ধুর ক্ষমা করে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ ক্ষমা করতে জানে বলে ঘোষণা দিয়ে ক্ষমা করে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে পারে। জামায়াতকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ত্যাগ করার জন্য চাপ দিতে পারে এবং এর বিনিময়ে বিচারের বিষয়টি শিথিল করার প্রস্তাব দিতে পারে।
কামারুজ্জামানের মূল্যায়ন ছিল, ‘যেভাবেই উপসংহার টানা হোক না কেন তাতে জামায়াত রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যেই মিডিয়া জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধীদের দল বানিয়ে ফেলেছে। যদি সরকারের বর্তমান ঘোষণা অনুযায়ী বিচারকার্য চলে, তাহলে জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে দেশে বিদেশে চিহ্নিত হয়ে যাবে।’
তার মতে, জামায়াতের নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে বিচার করার পর জামায়াতকে সরকার নিষিদ্ধ না করলেও দলের ভাবমর্যাদা ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ হবে। দেশের ভেতরে-বাইরে জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী, বাংলাদেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধীদের দল হিসেবে চিহ্নিত করবে। ফলে জামায়াতের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। দলের ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ওই চিঠিতে জামায়াতকে পেছন থেকে সর্বাত্মক শক্তি নিয়োগ করে নতুন প্লাটফর্মে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন কামারুজ্জামান। লিখেছেন, সেই প্লাটফর্মকে রাজনৈতিকভাবে কেউ সরাসরি আক্রমণ করতে পারবে না।
তার ভাষায়, ‘আপাতদৃষ্টিতে জামায়াতে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে এমনটি মনে হলেও ক্ষতির কিছু নেই। বরং হিকমতের খাতিরে তেমন একটা কিছু করে হলেও নতুন আন্দোলন দাঁড় করানোর ঝুঁকি গ্রহণ করা উচিত।’
এরপর ওই চিঠি নিয়ে জামায়াতের আধুনিক ও তরুণতর প্রজন্মের মধ্যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। যদিও এর আগে থেকেই নতুন জামায়াতের কথা চিন্তা করে কাজ শুরু করেছিলেন কামারুজ্জামানসহ জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা। এদের মধ্যে যেখানে মীর কাশেম আলী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক বেশ কয়েকজন সভাপতিও রয়েছেন। ২০১০ সালের এপ্রিল-মে নাগাদ জামায়াতকে সংস্কার করতে একটি বৈঠকও করেন এদের কয়েকজন।
ওই সময় নয়টি বিষয়কে মোটা দাগে চিহ্নিত করে তারা সামনে এগোতে চেয়েছিল। এগুলো হচ্ছে:
০১. মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করায় জামায়াতের প্রথম সারির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রচারণা থাকায় সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয়ভিত্তিক ইমেজ তৈরি তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রায় চার দশক জামায়াতের বিরুদ্ধে এই প্রচারণা বন্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা আবার শুরু হয়েছে। এতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জামায়াতের ব্যাপারে একটি বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি সামনে চলে আসায় এটি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় জামায়াতের রাজনৈতিক ইমেজ পুনরুদ্ধার বা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত কঠিন হবে।
০২. দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে রয়েছে দুর্বলতা। তাদের কেউ কেউ বৃদ্ধ ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নতুন উদ্যমে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই।
০৩. জামায়াতের পরিবেশ রুদ্ধদ্বার (রেজিমেন্টেড) ধরনের। এজন্য ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন উদারনৈতিক ব্যক্তিরা এই দলে প্রবেশ করতে পারেন না। দলটিতে সৎ মানুষের অভাব না হলেও দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার মতো উপযুক্ত ও দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে। জামায়াতের বাইরে যেসব সৎ ও দক্ষ লোক রয়েছেন, তারা যেকোনও পর্যায়ে জামায়াতে যোগ দিতে উৎসাহবোধ করেন না।
০৪. জামায়াতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণা বর্তমানে আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এতে ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
০৫. রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে আধুনিক ধ্যান-ধারণার অভাব রয়েছে। সমস্যাসংকুল বাংলাদেশের বেশকিছু মৌলিক সমস্যা রয়েছে। সব দলই এসব বিষয়ে কোনও না কোনও বক্তব্য দিয়ে থাকে। এসব সমস্যার অগ্রাধিকার নির্ণয় করে জামায়াত উত্তম বিকল্প কোনও সমাধানের দিকনির্দেশনা জাতির সামনে পেশ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অসৎ নেতৃত্বের বিকল্প হিসেবে জামায়াতের নেতারা দলকে জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেননি।
০৬. ভোটের রাজনীতিতে বর্তমানে যে কৌশল নেওয়া হয়, তা নিতে জামায়াতের বেশ সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
০৭. জামায়াত নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনার আলোকে নিজেদের উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কাছে নিজেদের কর্মসূচি উপস্থাপনের জন্য যে ধরনের আধুনিক পরিভাষা ব্যবহার করা প্রয়োজন, তা ব্যবহারে জামায়াতের ব্যর্থতা রয়েছে।
০৮. নীতি ও আদর্শের সঙ্গে আপস না করেও কৌশলগত কারণে উদারনীতি অনুসরণ করে সমর্থনের পরিধি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি জামায়াতের নেই।
০৯. বর্তমানে বিএনপির ভঙ্গুর অবস্থার কারণে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির ঐক্য ভবিষ্যতে কতটা কার্যকর হবে তা বলা কঠিন।
তবে জামায়াতে প্রাচীনপন্থী হিসেবে পরিচিত মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মরহুম অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ, এটিএম আজহারুল ইসলামসহ একাত্তরের বিতর্কিত নেতারা এই পথে হাঁটেননি। উল্টো কামারুজ্জামানের এ প্রক্রিয়াকে সুযোগসন্ধানী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সোনার বাংলাদেশ ব্লগে (রাত ০৮:৩৫) জামায়াতের বুদ্ধিজীবী হিসেবে খ্যাত শাহ আবদুল হান্নানের একটি লেখার পর। সেখানে তিনি লিখেছেন, Qamruzzaman has given his views in a private letter. Those who have circulated to others have done wrong. I feel that Jamaat is doing well now. The present leadership is quite efficient. Change in Jamaat is a matter for the party.They can accept some part of Mr Qamruzzaman’s view or may not.It is the privilege of the party and its’ Shura. Enemies will try to capitalize on this letter but Jamaat can hardly be harmed in this manner.Jamaat should not feel any worry on this. Shah Abdul Hannan
ওই সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বর্তমানে কারাবন্দি আজহারুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘কারাগারে যারা আছেন, তারা দল পরিচালনার জন্য বাইরের নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। কেউ যদি এমন কিছু করার চেষ্টা করেন তবে তা হবে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র’।
জামায়াতরে একটি দায়িত্বশীল সূত্রমতে, ২০১০ সালের ৯ জুন ঢাকার একটি বেসরকারি ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যালোচনা করে একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ দাঁড় করায়। এতে তারা জামায়াত সম্পর্কে মন্তব্য করে যে, জামায়াত বর্তমানে ইমেজ সংকটে ভুগছে। ভবিষ্যতে এই অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে পারে।
এসব বিষয়ে অবগত হলে কারাবন্দি মতিউর রহমান নিজামী শিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াতের তরুণ নেতৃত্বকে এই বলে বোঝান যে, মীর কাশেম আলী ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সুযোগসন্ধানী। তাদের কথায় কান না দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
নিজামী তখন সাবেক আমির গোলাম আযমের কাছে এই বিষয়ে দারস্থ হলে তিনি মীর কাশেম আলীকে ডেকে এসব থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী ৭১- এর পরবর্তী সময়ে জাহানারা ইমাম ও কর্নেল কাজী নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে বিচার দাবির আন্দোলনের পর সর্বশেষ ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে বিপদে পড়ে। তরুণ প্রজন্মের কাছে আবারও জামায়াতের একাত্তরের দানবীয় ভূমিকা নতুন করে সামনে আসে। ওই সময়টাতে জামায়াতের অভ্যন্তরে সংকট কাজ করে। বন্ধ হয় নতুন রিক্রুট।
এ বিষয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ছাত্রশিবিরের সাবেক দফতর সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার বলেছিলেন, জামায়াত-শিবিরের তরুণ প্রজন্ম তাদের নিয়ে থাকতে চায়। তাদের একাত্তরের ভূমিকা দলটির কাছে জুডিশিয়াল কিলিং।
এরপর ২০১৩ সালে জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার রায়কে কেন্দ্র সারাদেশে নাশকতা চালায় দলটির নেতাকর্মীরা। ওই সময়টাতেই পরিষ্কার হয়ে যায়, কামারুজ্জামানসহ দলটির সংস্কারের সঙ্গে যুক্তদের চিন্তাভাবনা গ্রহণ করেনি নবপ্রজন্মের জামায়াত-শিবির।
ফলশ্রুতিতে বিদেশ চলে যান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। দৃশ্যের বাইরে আছেন শাহ আবদুল হান্নান। আড়াল হয়ে পড়ে জামায়াতের সংস্কারের বিষয়টিও।
এ বিষয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয়েছিল জামায়াতের একাত্তর পরবর্তী নেতা, তৎকালীন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সাবেক ছাত্রশিবির সভাপতি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে। রাজধানীর শ্যামলীর ঢাকা হাউজিংয়ের নিজ বাসায় কথা হয়েছিল তার সঙ্গে। প্রতিবেদকের প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন, এ ধরনের একটা প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটি বন্ধ রয়েছে।
তবে জামায়াতের মহানগরের দায়িত্বশীল, যিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন কারণে যুক্ত থাকেন, এমন এক কর্মী জানায়, এ ধরনের প্রচেষ্টা এখন নেই। তবে জামায়াত এখন নিষিদ্ধ হতে চায়। তাহলেই বেঁচে যায়। এই কর্মীর দাবি, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে এখন এক গ্রুপ সংগঠন গোছাবে, অন গ্রুপ নির্বাচনের কাজে নেমে পড়বে।
জামায়াতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কামারুজ্জামানের নামে প্রচারিত ওই চিঠিটি তার লেখা ছিল না। বরং তার নামে প্রচারিত হয়েছে। সংস্কার করতে চাওয়া নেতারা দলের পরিস্থিতি অনুধাবন করতেই কামারুজ্জামানের নামে এ চিঠি প্রকাশ করেন। যদিও দলটির প্রবীণ নেতাদের একটি বড় অংশের বিরোধীতা করায় থমকে যায় জামায়াতের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিকল্পনাটি।
সূত্রের দাবি, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের জামায়াতের পদ-পদবী ছাড়তে বলার কারণেই মূলত প্রবীণরা কামারুজ্জামানের চিঠির বিরোধীতা করেন। একে ফিতনা হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালান। এতে প্রবীণরা সফলও হন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জামায়াতের অন্তত সাতজন নেতার একাধিক মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্র : ট্রিবিউন