এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরামর্শ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১:২৩:৩৬,অপরাহ্ন ৩১ মার্চ ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: আগামীকাল বুধবার থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার পৌনে এগার লাখ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষা দিচ্ছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য এ পরীক্ষাটির গুরুত্ব অপরিসীম। মাত্র ৫/৬ বছর পরই তোমরা সবাই শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। চাকরি, ব্যবসা, ক্রীড়া, আইন, রাজনীতি, বিজ্ঞান, গবেষণাসহ নানা পেশায় মূল্যবান অবদান রাখবে। তবে এ পরীক্ষাটির ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে তোমাদের ভবিষ্যত জীবনের গতি-প্রকৃতি ও সমৃদ্ধি। তোমাদের ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ।
বেশ সঙ্কটের মধ্য দিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। জাতির দুর্ভাগ্য যে, একটি রাজনৈতিক জোটের বিবেকবর্জিত অব্যাহত হরতাল-অবরোধের কারণে এসএসসির রুটিন অনুযায়ী প্রায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর একটি পরীক্ষাও নেয়া সম্ভব হয়নি। সব পরীক্ষা নিতে হয়েছে শুক্র ও শনিবারে। তারা খেলার বিজয় আনন্দে হরতাল বন্ধ করলেও তোমাদের পরীক্ষা বা লেখাপড়ার জন্য তাদের কোনো দায় নেই, কোনো ছাড় তারা দেন না।
তোমাদের ৩০ কর্মদিবসের পরীক্ষা শুধু শুক্র-শনিবারে নিতে গেলে চার-পাঁচ মাস লেগে যাবে। সেটি সম্ভব নয়। পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের দাবি, মতামত ও পরামর্শের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা যে কোনো পরিস্থিতিতে রুটিনমাফিক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এর কোনো ব্যাত্যয় হবে না। শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কারণে ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিলের পরীক্ষাগুলো স্থগিত করেছি। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই এ পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করা হবে।
তোমাদের যাতায়াত ও পরীক্ষা কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সর্বাত্মক নজরদারি থাকবে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য, সাধারণ জনগণ তোমাদের পাশে আছে। তোমরা নিশ্চিন্ত মনে পরীক্ষা দেবে। আমি হরতাল-অবরোধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনাকারী জোটের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- এসব পরীক্ষার্থীরা বিশেষ কোনো দলের সন্তান নয়, ওরা জাতির ভবিষ্যত। এদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা দিতে দিন। দয়া করে কোনো হটকারী ঘটনা ঘটাবেন না। আমি ষ্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই- দেশের যেকোনো স্থানে আমাদের একজন পরীক্ষার্থীরও যদি কোনো ক্ষতি হয়, তার দায়দায়িত্ব আপনাদেরকেই বহণ করতে হবে। মানুষ আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না।
একটি অশুভ চক্র রাজনৈতিক ও আর্থিক ফায়দা লোটার লক্ষ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রশ্নপত্রের নামে সাজেশন ফেসবুকে দিয়ে পরীক্ষার্থীদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাতে তৎপর আছে। সরকার ওই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তোমরা যথেষ্ট ভালোভাবে প্রস্তুত হয়েছো। নিজের প্রস্তুতি মতো সঠিকভাবে নিজের পরীক্ষাটি দাও। তোমরা কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবে না। ওগুলো মিথ্যা ও ভাওতাবাজি। ওর পেছনে অযথা সময়, অর্থ ও মনোযোগ নষ্ট করবে না। আমি অভিভাবকগণের প্রতিও সজাগ থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। পরীক্ষার সময় আপনাদের সন্তানদের প্রতি বেশি স্নেহশীল হবেন এবং বেশি সময় দেবেন।
পরীক্ষার্থীদের প্রতি আমার পরামর্শ হলো- মন দিয়ে পড়াশুনা করবে। তবে এই সময়ে স্বাস্থ্যের প্রতি সবাইকে অধিক যত্নবান থাকবে। অভিভাবকগণ ওদের প্রতি অধিক মনোযোগ দেবেন আশা করি। তোমরা সবাই খুব মেধাবী। সকল বাধার বিন্দাচল পেরিয়ে তোমরা এগিয়ে চলো। জাতি তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু দায়িত্বহীন মানুষের অপকর্ম এবং সব ধরনের ব্যর্থতা, পিছুটান, অবিবেচকের মতো কর্মকাণ্ড তোমাদের চলার পথকে আটকে রাখতে পারবে না। তোমরাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশিত ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বে।
আমি পুরো শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে তোমাদের সবার সফলতা কামনা করছি।