ইয়েমেনে ৬০০০ বাংলাদেশী অবরুদ্ধ, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫৭:২৪,অপরাহ্ন ৩১ মার্চ ২০১৫
প্রবাস ডেস্ক :: ইয়েমেনে চলছে আরব লীগের বিমান হামলা। এর প্রেক্ষিতে সেখান থেকে পাকিস্তান ও ভারতের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে তারা। কিন্তু সে দেশে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে সেখানে থাকা বাংলাদেশীরা।
ইয়েমেনের রাজধানীসহ দুটি শহরে ব্যাপকভাবে বোমাবাজি ও বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিদেশী শ্রমিকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। হতাহতের নিশ্চিত খবর পাওয়া না গেলেও বর্তমানে দুই শহরে অন্তত ৫-৬ হাজার বাংলাদেশী অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
তারা দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে বসবাস করছেন। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় তারা দ্রুত দেশে ফিরে আসতে চাইছেন। কিন্তু কীভাবে, কার সাথে যোগাযোগ করে তারা তাদের জীবন বাচাব্নে সেই কুলকিনারা কেউ-ই খুজে পাচ্ছেন না। কারণ দেশটিতে বাংলাদেশের কোনো দুতাবাস নেই।
আটকে পড়া বাংলাদেশীদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার যেনো তাদের দ্রুত উদ্ধারে এগিয়ে আসে। পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হওয়ায় বাংলাদেশে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যরাও উদ্বিগ্ন।
ইয়েমেন থেকে টেলিফোনে দেশটির সর্বশেষ অবস্থা বর্ননা করেন রাজশাহী বাঘমারার সাইফুল ইসলাম। তিনি আর্তি জানান, আমাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানে বেশকিছু বাংলাদেশী আছি কিন্তু কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। কোথায় কীভাবে কার কাছে যাব তা বুঝতে পারছি না। ভারত পাকিস্তানসহ অন্যরা যারা ছিল তারা সবাই গতরাতে চলে গেছে। শুধু আমরা বাংলাদেশীরাই আটকা পড়ে আছি। আমরা কোথাও বের হতে পারছি না। কোনো বার্তাও পাচ্ছি না। তাই কি করবো বুঝতে পারছি না। আমাদেরকে এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’
কতজন বাংলাদেশী দেশটিতে আটকা পড়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সংখ্যাটা সঠিক বলতে পারবো না, তবে আইডিয়া করে ও অন্যদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে বলতে পারি, ইয়েমেরে এডেল শহরে আছে এক থেকে দেড় হাজার বাংলাদেশী আর সানায় আছে আরো ৩-৪ হাজারের মতো।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশীদের অধিকাংশই তেল কোম্পানিতে কাজ করি।
সমস্যা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমস্যা হলো এখানে রোড ঘাট সব বন্ধ। রাস্তায় শুধু বোমাবাজি হচ্ছে। বিমান থেকেও হামলা হচ্ছে। আমরা ঘরেও থাকতে পারছি না বাইরেও বের হতে পারছি না। আর কোম্পানিও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভারত আর পাকিস্তানের লোকজন গতকাল চলে গেছে। আমাদের এখানে দুতাবাস নেই। তাই কার সাথে যোগাযোগ করবো তা বুঝতে পারছি না। এখন যে পরিস্থিতি তা আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে ইয়েমেন থেকে যশোরের কাদের হোসেন জানান, তারা সানায় বিমানবন্দরের কাছে একসাথে অনেক লোক থাকেন। কিন্তু ভারত এবং পাকিস্তানের লোকদের দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা হলেও তারা কোনো উপায় খুজে পাচ্ছেন না।
তিনি জানান, এখানে একের পর এক বিমান থেকে হামলা হচ্ছে, বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। ভিতরেও আতঙ্ক নিয়ে থাকছি। কখন কি হয় জানিনা।
কাদের আরও জানান, এখানে দূতাবাস না থাকায় আমরা সৌদি দূতাবাসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।
তিনি জানান, আমরা একসাথে ৬ বাংলাদেশী আছি এবং সানায় বিভিন্ন স্থানে আছে ৩ হাজারেরও বেশী বাংলাদেশী। সব দেশ তাদের নাগরিকদের জন্য ব্যবস্থা নিলেও বাংলাদেশ এখনো কেন কোনাে ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা বিডিলাইভের কাছে জানতে চান কাদের।
মান্নান নামের আরেক বাংলাদেশী তাদের দ্রুত সেখান থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। তারা খুবই অাতঙ্কে আছেন বলেও জানান মান্নান।