আর বাড়ছে না ২০ দলের হরতাল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৬:৪১,অপরাহ্ন ২৩ মার্চ ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ঢাকাসহ দেশের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এটা নিশ্চিত। এখন তারা কীভাবে অংশ নেবেন সেটা জানা যাবে কয়েকদিনের মধ্যে। সরকার পতন করে নিরদলীয় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবিতে ১ ফেব্রয়ারি থেকে শুক্র ও শনিবার বাদে সব কার্যাদিবসে ধাপে ধাপে হরতাল দিয়েছে ২০ দল। তবে এবার আর হরতাল না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০ দলীয় জোট। তবে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে দাবি না মানা পর্যন্ত।
ঢাকা উত্তর- দক্ষিণ ও চট্রগ্রাম সিটি করপোরশনে বিএনপি নেত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অংশ নিবে। সে কারণেই মূলত এ সপ্তাহে আর হরতাল বাড়ানোর সুযোগ নেই। কিন্তু সরকার পতনের আন্দোলন অব্যাহত রাখবে ২০ দল। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী হরতাল বুধবার পর্যন্ত চলবে। এর পরের দিন মহান স্বাধীনতা দিবস, তারপরের দুইদিন শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটির দিন। রোববার মনোনায়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষদিন। এ সব কারণে আর হরতাল বাড়ছে না দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি সিটি করপোরশন নির্বাচনে চমক নিয়ে আসছে । সরকার বিরোধী দলের আন্দোলন বন্ধ করার জন্য সিটি নির্বাচন দিয়ে ষড়যন্ত্র করতে চায়। কিন্তু সরকার ফেসে গেছে। বিএনপি আন্দোলনও চলাবে আবার নির্বাচনেও অংশ নিবে। তারা দুইদিকে সামল দিতে পারবে না। এমনিতে তো তারা জনবিছিন্ন হয়ে পড়ছে। জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না।
জানা গেছে, এরই মধ্যে ২০ দলের শরীকদের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যেহেতু এই নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় না তাই নাগরিক সমাজ অথবা অন্যকোন ব্যানারে বিএনপির প্রার্থীরা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন। আর প্রার্থী হবে ২০-দলীয় জোটের পক্ষে।
বিএনপির এক নেতা জানান, এই মুহূর্তে প্রয়োজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু সরকার তা না দিয়ে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দিয়ে নতুন এক খেলা শুরু করেছে। কিন্তু এই খেলায় জিততে পারবেন না তারা। বিএনপি সিটি নির্বাচন নিয়ে ভাবছে। এখন কিভাবে এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে সেই কৌশল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে , তারা মনে করেন ঢাকার দু’টি এবং চট্টগ্রাম এই তিনটি সিটি নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপিসহ ২০-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা নির্বাচন ইস্যুতে প্রকাশ্যে আসতে পারবেন। আর নির্বাচন পুরোপুরি ফেয়ার না হলেও মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর পদে বিএনপির প্রার্থীরা জিতবে। আর যদি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয় তাহলে বিএনপির ঝিমিয়ে পড়া আন্দোলন চাঙ্গা করার আরেকটি সুযোগ পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া বিএনপি মনে করছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ঠেকিয়ে রাখা যায় না। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিএনপি লাভবানই হয়েছে। একদিনে নির্বাচন হলে উপজেলায় অধিকাংশ চেয়ারম্যান বিএনপিরই হত। উপজেলার প্রথম দিকের ফলাফল সেই ইঙ্গিতই দেয়। আর এবার যেহেতু ঢাকা ও চট্টগ্রামে একই দিন ২৮ এপ্রিল নির্বাচন হবে, তাই জোর করে ফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার সহজ সুযোগ পাবে না সরকার।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বিএনপির দখলে আছে। বিএনপি মনে করে তাই এটা ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল করা সুযোগ দেয়া ঠিক হবে না। আর ঢাকায় শাসক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও একাধিক প্রার্থী থাকার সুযোগ পাবে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান ঢাকা প্রতিদিন ডটকমকে জানান, বিএনপি যে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী দেবে তা নয়, তারা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে সমর্থন দেবে।
তিনি জানান, বিএনপি’র আশঙ্কা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর না আবার কোন কৌশলে সরকার নির্বাচন বন্ধ করে দেয়।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ঢাকা প্রতিদিন ডটকমকে বলেন, সিটি করপোরশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে এখন সিদ্ধান্ত হয়নি। আগে দরকার জাতীয় নির্বাচন সরকার তা না ষড়যন্ত্র করে করছে সিটি নির্বাচন।
তিনি বলেন, বিএনপি সব সময়ই নির্বাচনের পক্ষে তাই সিটি নির্বাচনে যেতে পারে। নির্বাচনে গেলে হরতাল শিথিল করা হতে পারে তবে চলমান অবরোধ চলবে।