অনন্ত বিজয় হত্যা : গোয়েন্দা নজরদারিতে একাধিক সাংবাদিক!
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:১৬:১১,অপরাহ্ন ১১ জুন ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যার ঘটনায় রিমান্ড নেওয়া ফটো সাংবাদিক ইদ্রিস আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে এখন পর্যন্ত ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য আদায় করা যায়নি বলে জানিয়েছে সিআইডির একটি সূত্র।
এদিকে, এ ঘটনায় সিলেটের আরো কয়েকজন সাংবাদিককে নজরদারিতে রেখেছে তদন্তকারী সংস্থা। দু’একজন ফটো সাংবাদিককে ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
সিআইডির বিশেষ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আবদুল্লাহেল বাকি বলেন, ‘আমরা কিছু জোরালো সন্দেহ বা তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁকে (ইদ্রিস) গ্রেপ্তার করেছি। তবে সেসব জোরালো প্রমাণ নয়। সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতের নির্দেশে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমাদের সন্দেহের পক্ষে অনেক কিছুই আছে, যা এখনই বলা যাবে না।’
ইদ্রিস আলী ছাড়াও নগরীতে কর্মরত রয়েছেন এমন আরো কয়েকজন সাংবাদিকের ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা গেছে।
সিআইডি সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মিনিট আগেই ঘটনাস্থলের ‘খুব কাছে’ উপস্থিত ছিলেন ইদ্রিস- এমন গুরুতর অভিযোগ যাচাই চলছে নানাভাবে। হত্যাকাণ্ডের সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে যাওয়া সিলেটের পাঁচজন সাংবাদিক তদন্তকারীদের নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে ইদ্রিসকে দেখেছেন। কিন্তু ইদ্রিস সেখানে যাননি বলে দাবি করে আসছেন। সোমবার সিলেট থেকে গ্রেপ্তারের পর ইদ্রিস আলীকে ঢাকায় এনে সিআইডি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তদন্তকারীরা কিছু তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছেন। সন্দেহভাজন ইদ্রিসের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করছে সিআইডি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কাজ করছে সিআইডির একটি চৌকস দল।
মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা ইদ্রিস আগে ‘ইসলামী ছাত্রসেনার’ সদস্য ছিলেন এবং পরে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হন। তার অতীত জাবন সম্পর্কেও খোঁজখবর নিচ্ছে তদন্তকারী দল। তবে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এখনো প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি সিআইডি কর্মকর্তাদের। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আলোচিত এ হত্যায় নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন।
গত ১২ মে সকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে। এ ঘটনায় সিলেট বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে। গত ২৫ মে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম শাখায় হত্যা মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী সোমবার স্থানীয় আলোকচিত্র সাংবাদিক ইদ্রিস আলীকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁকে আদালতে হাজির করে ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সোমবার গভীর রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের একটি গাড়িতে করে ইদ্রিসকে ঢাকার সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ইদ্রিস আলী জাতীয় দৈনিক ‘সংবাদ’ ও সিলেটের স্থানীয় দৈনিক ‘সবুজ সিলেট’-এ ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন। ইদ্রিস সিলেট সদর উপজেলার বিমানবন্দর থানার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের সাহেব বাজার এলাকার ফতেহগড় গ্রামের মো. ইলিয়াছ আলীর ছেলে। বাবা ইলিয়াস আলী বিমানবন্দর থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য।