পুলিশকে স্বামী স্ত্রী পরিচয় : উভয়ের স্ত্রী ও স্বামী থানায় হাজির
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৫৩:১৩,অপরাহ্ন ১২ ডিসেম্বর ২০১৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: অন্য এক ফ্যাসাদেই পড়ল কালীঘাট থানার পুলিশ! সোমবার রাতে তিন সওয়ারি দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ধাক্কা মারে কর্তব্যরত ট্রাফিক সাব-ইনস্পেক্টর স্বপন মণ্ডলের বাইকে। শুধু তাই নয় এরপর পুলিশকে চড় মারেন ওই তিনজন, পরে তিনজনই গ্রেপ্তার হন। এঁদের নাম মধুময় ঘোষ, শর্মিষ্ঠা ঘোষ ও সুরজিৎ বেরা৷। তখন মধুময় ও শর্মিষ্ঠা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। সুরজিৎ তাঁদের বন্ধু৷ খবরের কাগজে ও টিভিতে তাঁদের গ্রেপ্তার হওয়ার ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার দুপুরের পর অন্য এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলো পুলিশ। কারণ দুই দফায় মধুময় ও শর্মিষ্ঠার আসল স্বামী ও স্ত্রী এসে হাজির হলেন থানায়। শর্মিষ্ঠা ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার জামিন পেয়েছেন। কিন্তু মধুময় ও সুরজিৎ আপাতত হাজতে। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতে তোলা হবে৷। হঠাৎ আসল স্বামী-স্ত্রী দাবি করে এক পুরুষ ও নারী হাজির হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দ্বন্দ্বে পড়েন থানার অফিসাররা। প্রথমে মধুময় ঘোষের স্ত্রী বলে দাবি করে টুলু ঘোষ এসে অভিযোগ জানান, ২০১০ সালে তাঁদের রেজিস্ট্রি করে এবং ২০১১ সালে তাঁরা সামাজিক অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেন। এরপর তাঁদের দুজনের মধ্যে দাম্পত্য জটিলতা দেখা দেয়৷। খিদিরপুর অঞ্চলে মধুময়ের একটি ঘড়ি ও চশমার দোকান রয়েছে। টুলু ঘোষ থানায় দাবি করেন, তাঁর ওপর নাকি নির্যাতন করা হয়েছিল। এ জন্য একটি মামলায় মধুময় নাকি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরে জামিনও পান। বিচ্ছেদ ও খোরপোশ সংক্রাম্ত মামলাও চলছে। সব শুনে পুলিশের অনুরোধ মতো তিনি লিখিত অভিযোগও থানায় জমা দেন৷। তবে এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই, শর্মিষ্ঠা ঘোষের আসল স্বামী বলে দাবি করে শুভেন্দু মণ্ডল থানায় হাজির হন। তাঁর দাবি, শর্মিষ্ঠার পদবি ঘোষ নয়, মণ্ডল। ওয়াটগঞ্জ এলাকায় তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। ১২ বছরের একটি মেয়ে আছে। মেয়ের নাম শুভমিতা মণ্ডল৷। এ সব কথা লিখিত অভিযোগে থানায় জানিয়েছেন। শুভেন্দুর বক্তব্য আবার অন্যরকম শোনায় পুলিশের কাছে৷। জনৈক মহম্মদ ইসমাইলের সঙ্গে শর্মিষ্ঠা নাকি কিছুদিনের জন্য কোথাও গিয়েছিলেন। পরে আবার ফিরেও আসেন৷ এ জন্য শুভেন্দুবাবু বিয়ে সংক্রাম্ত সব কাগজপত্র থানায় দেখান। আর সব দেখে-শুনে রীতিমতো ফাঁপড়ে পড়েন কর্তব্যরত পুলিশরা। কারণ দুজন পূর্ণবয়স্ক নর-নারী তাঁদের একজন বন্ধুকে নিয়ে রাতে গাড়িতে ঘুরবেন, তা নিয়ে পুলিশের কী-ই বা করার আছে। কিন্তু হঠাৎ করে দুজনের স্বামী-স্ত্রী চলে আসায় পুলিশ ভেবে পাচ্ছে না, এই মুহূর্তে কী করণীয়! মধুময় ও তাঁর বন্ধু সুরজিৎ অবশ্য এসব শুনে চুপ করেই থেকেছেন। যদিও আবার রীতিমতো সরব থেকেছেন টুলু ঘোষ ও শুভেন্দু মণ্ডল। এখন ভুয়া পরিচয় দিয়ে পুলিশকে মারার পর গ্রেপ্তার হলে আলাদা কোনো মামলা শুরু করা যায় কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এজন্য, উপনগরপাল (দক্ষিণ) মুরলীধর শর্মার সঙ্গে আইনি বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ নিয়ে কালীঘাট থানা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।