কোথাও পৌঁছায়নি কামারুজ্জামানের রায়ের কপি
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৫০:২৮,অপরাহ্ন ০৭ এপ্রিল ২০১৫
নিউজ ডেস্ক :: বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের কপি ৩০ ঘণ্টা পরও সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের কাছে পৌঁছেনি।
কারা কর্তৃপক্ষ, আসামী পক্ষের আইনজীবী এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে তারা কপি হাতে পাননি।
যোগাযোগ করা হলে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, আদালতের নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরই রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, “তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। সবকিছু আইন অনুযায়ী হবে।”
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজের রায় সেই দিনই কারাগারে পৌঁছে গিয়েছিল এবং সেই রাতের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিলো।
সে কারণেই হয়তো গতকাল (সোমবার) সকাল নটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর থেকেই কারা কর্তৃপক্ষ রায়ের কপি হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। দণ্ড কার্যকর করার প্রস্তুতি হিসাবে তারা মি. কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদেরও ডেকে পাঠান।
আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে দেওয়া রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছুনোর পর কামারুজ্জামানকে কারা কর্তৃপক্ষ আদেশটি পড়ে শোনাবেন এবং তিনি প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে চান কিনা তা জানতে চাইবেন।
কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষা না চাইলে এর পর যে কোন সময় দন্ড কার্যকর করা যাবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে রায়ের একটি সংক্ষিপ্ত ভার্সন চেয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেটির ভিত্তিতেই তখন দ্রুত রায় কার্যকর করা হয়।
কিন্তু কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিস্টার কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ফাঁসির আদেশ দেন।
তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা এবং খুনের অভিযোগসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগে বলা হয়েছিল, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মি. কামারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্য করা-সহ মানবতা বিরোধী অপরাধের মোট সাতটি অভিযোগ আনা হলেও ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয় বলে জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের একজন আইনজীবী তুরীন আফরোজ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন জানান মিস্টার কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা।
তবে আপিল বিভাগ ফাঁসির ওই আদেশই বহাল রাখেন। তখনই মিস্টার কামারুজ্জামানের একজন আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন তারা এই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন। এরপর গত ৫ মার্চ ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করে আসামি পক্ষ।
সূত্র : বিবিসি