ওসমানীনগর-বালাগঞ্জে কাল বৈশাখীর ছোবলে কোটি টাকার ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০৫:৩২,অপরাহ্ন ০৯ এপ্রিল ২০১৫
ওসমানীনগর সংবাদদাতা::
ওসমানীনগর-বালাগঞ্জের ১০মিনিটের কাল বৈশাখী ঝড়ে ঘর বাড়ি, বোরো ধান, ফসলি গাছ, বিদ্যুৎ, গরু ছাগলসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় এবং গেল তিন দিনের পৃথক ঝড় তুফানে দুই উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ বর্গ কি.মি. এলাকায় আড়াই শতাধিক পরিবারের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। বৃষ্টির মত ব্যাপক শিলা বৃষ্টি হয়। এতে বোরো ধানের সীমাহীন ক্ষতি হয়েছে বলে হাওর পাড়ের কৃষকরা জানিয়েছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সাড়ে নয়টা দিকে দুই উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার ক্ষতি হয়। পশ্চিম পৈলনপুর, সাদীপুর, উছমানপুর, তাজপুর,বোয়ালজুর, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায় শক্তিশালী কাল বৈশাখী ঝড়। ঝড়ের কবলে পড়ে আধা পাকা, কাচা ঘর বাড়ি, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঝড়ের কারণে এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ঝড়ের কারণে উপজেলা সকল এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বালাগঞ্জ উপজেলার পাশে বিদ্যুতের মেইন লাইনের উপর একটি গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুত লাইন ছিড়ে যায়। বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুটি, মিটার ভেঙ্গে পড়েছে ও লাইন ছিড়ে যায়। সাদীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজি আব্দুর রব জানান, গতকালের ঝড়ে সাদীপুর ইউনিয়নের লামা তাজপুর,সাদীপুর, দরখা, খছরু পুর, পূর্ব তাজপুর, সুরিকোণা, সুন্দিখলা, চর তাজপুর, পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর,রশিদপুর, হামছাপুর, তাজপুর ইউনিয়নের কাশিপাড়া, হস্তিদূর, জিয়াফক, হরিনগর গ্রামে ২৫টি ঘর ভেঙ্গে যায়।
তাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরান রব্বানী জানান, তাজপুর ইউনিয়নের হস্তিদূর গ্রামে ৩টি আইলাকান্দি, নটপুর, চরইসবপুর, লাল কৈলাস,শব্দকরপাড়া, রঙ্গিয়-দুরাজপুর লোকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নে ১৭টি ঘর বাড়ি ভেঙ্গে যায়। বোয়ালজুর ইউনিয়নের চান্দাইরপাড়া, নশিরপুর গ্রামের উপর দিয়ে কাল বেশাখী ঝড় বয়ে যায়।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাও. আলী আছগর জানান,পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের আব্দুল মালিক,তরিক মিয়া, আশিক মিয়া, রশিদপুর গ্রামের রইচ মিয়া,আব্দুল হক, শামছুন নেছা, আব্দুল করিম, হামছাপুর গ্রামের কুদরত মিয়া, আব্দুল আহাদ, শমছুল হক, সাদ মিয়া, এলাছ মিয়া, হক সাব, জিতু মিয়া, শমসর আলী, আব্দুল গফুর, ওয়ারিছ আলীর ঘর ভেঙ্গে যায়। তাজপুর ইউনিয়নের হস্তিদূর গ্রামের সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ জানান, তার নিজের ঘর,তার প্রতিবেশি চমক বিবির ঘর , অন্ধ রমজান আলীর ঘর, এবং দুরাজপুর গ্রামের ময়না মিযার ঘর ভেঙ্গে যায়।
এছাড়া সকাল ছাড়াও গেল দু’দিনের ঝড় তুফানে উপজেলার উমরপুর ,পশ্চিম পৈলনপুর, দয়ামীর, গোয়ালাবাজার, বালাগঞ্জ, এবং পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের প্রায় দুইশ পরিবারের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে যায়। এতে ১৩৩ টি পরিবারের ৯শ ৪০ জন লোক ক্ষতিগ্রস্থ হন। এদের মধ্যে আহত হন ১৬ জন এবং ২৭টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায়, আংশিক ১৮১ টি কাচা বাড়ি এবং ২৭ টি পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, গেল দু’দিনের ঝড় তুফানের ক্ষতির তালিকা করে পাঠানো হয়েছে। আজকের ঝড়ের ক্ষতির পরিমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুর রহমান বলেন, আজকের ঝড়ের ক্ষতির পরিমাণ পাইনি। গেল দু’দিনের হিসেব পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরে সরকারী কোন বরাদ্ধ আসেনি।