একনেকে ১ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ব্যয়ে ৫ প্রকল্প অনুমোদন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৬:৩১,অপরাহ্ন ০৬ জানুয়ারি ২০১৫
নিউজ ডেস্ক::
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১ হাজার ৩৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার ব্যয়ে মোট ৫ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই ৫টি প্রকল্পের মধ্যে ৩টি নতুন ও ২টি সংশোধিত। মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৩২৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার সকালে শেরে বাংলানগর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় খাগড়াছড়ির পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত বেইলী সেতুর জায়গায় পিসি গার্ডার ও আরসিসি সেতু এবং আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সড়কে পিসি গার্ডার সেতু, আরসিসি সেতু এবং আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ নামক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্পটি নিয়ে বলেন, ‘এ প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়িতে পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত বেইলী সেতুর স্থলে ৩৪টি পিসি গার্ডার সেতু, ৯টি আরসিসি সেতু এবং ১০টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। ফলে জেলায় নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। জানুয়ারি ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সংকট দূর করতে এ সম্পর্কিত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটির নাম ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়)।’
আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪টি ছাত্র হল এবং ২টি ছাত্রী হল রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো একটি ৫ তলা ছাত্র হল ও ১টি ৫ তলা ছাত্রী হল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে ।
এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য একটি ১০ তলা কোয়ার্টার ভবন নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে জানুয়ারি ২০১৫ থেকে জুন ২০১৯ মেয়াদে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালি ও বেলকুচি উপজেলা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। সীমিত অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, অপর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা , উচ্চ বেকারত্ব, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগই হচ্ছে চর এলাকা নিয়ে গঠিত এ দুটি উপজেলার বৈশিষ্ট্য। সরকার এ উপজেলা দুটির অতি দরিদ্র মহিলাদের সাহায্যের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে দরিদ্রাবস্থা থেকে বের করে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এজন্য একনেক সভায় ‘ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’নামের একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রকল্পটি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং এ পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার উল্লিখিত উপজেলা দুটোর ২১ হাজার দুস্থ মহিলার জীবিকায়নের ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই পর্যায়ে এ কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের আয়বর্ধক কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর এদেরকে ১৫ হাজার টাকা করে থোক বরাদ্দ দেওয়া হবে যাতে তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হতে পারে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানুয়ারি ২০১৫ থেকে জুন ২০১৮ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম এতে ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য দেবে। বাকি টাকা দেবে সরকার।’
সংশোধিত ২টি প্রকল্প হচ্ছে কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্প ও শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে অবস্থিত সরকাকারি পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট কলেজ সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প। এই দুটি প্রকল্পের ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৫৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ ও সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।