জুলফিকার তাজুল:: রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট যেন এক মায়াজাল। সিলেটবাসীর কাছে রাতারগুল মানে মিনি সুন্দরবন। যদিও সুন্দরী গাছের অস্তিত্ব নেই। একবার যিনি আসবেন, বার বার আসতে চাইবেন তিনি। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভুমি পুরো এলাকাটি নীলাভ জল, চারপাশের সবুজের চাদর আর শুনসান, নিরবতা হারিয়ে যেতে মন চাইবে না কারো। কায়াকিং আমাদের দেশে শুরু হওয়া তুন এক এডভেঞ্চারের নাম।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম লেক কাপ্তাই এ সর্বপ্রথম কায়াকিং এর যাত্রা শুরু হয়। দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে জলে ভেসে বেড়ানোর রোমাঞ্চকর এই ক্রিয়াটি। রাঙামাটির পর এবার রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে শুরু হল কায়াকিং পর্ব। আর তাই এমন পরিবেশে পর্যটক টানতে নতুনভাবে যোগ হয়েছে কায়াকিং এডভেঞ্চার। চারদিকে সবুজের চাদরে মোড়ানো অথৈ জলে নিজেই চালাবেন নৌকা। এমন এডভেঞ্চার নিশ্চয়ই কেউ মিস করতে চাইবেন না।
এমন এডভেঞ্চার নিশ্চয়ই কেউ মিস করতে চাইবেন না। আর সে কারণেই রাতারগুলে কায়াকিং উপভোগ করতে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়। যদিও এখনো অনেকে জেনারেল কায়াকিং এর সাথে পরিচিতি লাভ করতে পারেননি। তারপরও কায়াকিং করছেন প্রায় শতাধিক। কায়াকিং ব্যাপারটি সব সময় টিভি, সোস্যাল মিডিয়ার চোখে আসছে তরুনদের, সেই এডভেঞ্চার এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে চালু হয়ে গেছে।
কায়াক শব্দটা এদেশে প্রচলিত নয়। ফাইবার কাঠ পাঠের তন্তু দিয়ে তৈরী ১০ ফুট লম্বা সরু নৌকাকে কায়াক বলা হয়। চালাতে হয় বৈঠা দিয়ে। কানাডায় প্রথম শুরু হয় কায়াক চালনা। বিদেশে সমুদ্র, নদীতে কায়াক চালনার প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে, যেমনটি আমাদের সিলেট অঞ্চলের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিনোদনের জন্য এখন সিলেটের রাতারগুলে কায়াকিং এডভেঞ্চার চালু হয়েছে। রাতারগুলের কায়াকগুলো দেশের অন্য স্থান থেকে আরো উন্নত ও নিরাপদ। এগুলো আমদানী করা হয়েছে সুদূর ব্রাজিল থেকে।
সম্প্রতি কায়াকিং করে আসা ট্রাভেলার আইনুল ইসলাম ট্রাভেলার গ্রুপ সিলেটের সাথে আলাপ করে জানা যায়, নিজ হাতে নৌকা চালিয়ে জল আর সবুজের সাথে নীলাজলের বুক চিরে ইচ্ছে মত ঘুরতে দারুন লাগে। তিনি জানান, কায়াকিং পয়েন্টের লোকেরাই শিখিয়ে দেয় কিভাবে কায়াকিং করতে হয় যার কারণে চালাতে তেমন বেগ পেতে হয় না। কায়াকিং করতে মন জুড়িয়ে যায়, চলে আসতে মন চায় না। বিষয়টাতে দারুন এডভেঞ্চার রয়েছে। রাতারগুল সোহেল স্কয়ার ইকো রিসোর্ট এর প্রোপ্রাইটর শাহ আল সোহেল বলেন, কায়াকিং নিয়ে মিডিয়া ভালো ভূমিকা রাখতে পারলে পর্যটকরা হুমড়ি খেয়ে পড়বে। বর্ষা মৌসুমে কায়াকিং করার উপযুক্ত সময়।
যাতায়াত ও খরচাপাতি
সিলেটের বন্দর বাজার পয়েন্ট থেকে সিএনজিযোগে সাহেব বাজার হয়ে মটরঘাট পৌঁছে ডিঙি নৌকা ভাড়া করে রাতারগুল গিয়ে চৌরঙ্গী ঘাট কায়াকিং ক্যাম্পিং পয়েন্ট সোহেল স্কয়ার বললেই হবে। কায়াকিং করতে হলে প্রতি ঘণ্টা ১৫০ টাকা দিতে হয়, একটি নৌকাতে ৫/৬ জন কায়াকিং করতে পারবেন।